(ছবি) OROP বিতর্ক : ফের আটক প্রতিবাদী রাহুল গান্ধী, সন্ধ্যার পর থেকে যেভাবে মোড় নিল বিতর্ক
দিল্লির যন্তরমন্তরে কংগ্রেসের তরফে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। কংগ্রেস সহ সভাপতি সেখানে পৌঁছলে পুলিশ কন্ট্রোল রুম জিপ তাঁকে প্রায় একপ্রকার তুলে নিয়ে যায়।
নয়াদিল্লি, ৩ নভেম্বর : প্রাক্তন সেনাকর্মী রামকিষাণ গ্রেওয়ালকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিক্ষোভে যোগ দিতে গিয়ে ফের আটক হলেন কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গান্ধী। এই নিয়ে দু'দিনে মোট তিনবার আটক করা হল রাহুলকে।
এদিন দিল্লির যন্তরমন্তরে কংগ্রেসের তরফে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। কংগ্রেস সহ সভাপতি সেখানে পৌঁছলে পুলিশ কন্ট্রোল রুম জিপ তাঁকে প্রায় একপ্রকার তুলে নিয়ে যায়। পরে পুলিশের তরফে জানানো হয়, রাহুলের সুরক্ষার স্বার্থেই তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আক্রমণাত্মক কংগ্রেস
তবে এই যুক্তি কোনওভাবেই মানতে রাজি নয় কংগ্রেস। রাহুলের মতে, কেন্দ্রের উচিত সেনার সম্মান করা। সীমান্তে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন সেনা-জওয়ানরা আমাদের হয়ে লড়াই করছে। এমন ব্যবহার করলে সেনার মনোবল ধাক্কা খাবে।
পুলিশের যুক্তি
যদিও পুলিশের যুক্তি রাহুল গান্ধী এসেছে শুনেই জনতা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তাদের সামলানো পুলিশের পক্ষ্যে অসম্ভব হয়ে উঠছে বুঝতে পেরেই কংগ্রেস সহ সভাপতিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
তৃতীয়বার আটক রাহুল
জানা গিয়েছে, প্রথমে রাহুল গান্ধীকে পার্লামেন্ট স্ট্রিট পুলিশ স্টেশন ও পরে তুঘলক রোড পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। ঠিক যেভাবে সুবেদার রামকিষাণ গ্রেওয়ালের মৃত্যুর পরে রাহুলকে বুধবার দু'বার আটক করে একাধিক পুলিশ থানাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ঠিক সেভাবেই।
কংগ্রেস নেতাদের প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পরও একইভাবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেস নেতা মনীশ তিওয়ারি জানিয়েছেন, এটুকুই বলতে পারি, এটা গণতন্ত্র নয়। আর এক কংগ্রেস নেতা জগদীশ টাইটলার বলেন, রাহুলজী সেনার হয়ে আওয়াজ তুলেছেন। আজ সারা দেশ তাঁর সঙ্গে রয়েছে।
রাহুলের প্রতিক্রিয়া
এদিন আটক হওয়ার পরে রাহুল গান্ধীও বলেন, আমাকে গাড়িতে এক জায়গায় বসিয়ে রেখে দিয়েছে পুলিশ। বাইরে বেরতে দিচ্ছে না। বাইরে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে, এমনই জানানো হয়েছে। আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা একরকম, তবে সেনাকর্মীর বাড়ির লোকের সঙ্গে যা দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, তাদের ফেলে পেটানো হয়েছে, তা এককথায় অমানবিক। কেন্দ্রের এই নিয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
সকালে রামকিষাণের শেষকৃত্যে রাহুল
এর আগে এদিন সকালে রাহুল গান্ধী সুবেদর রামকিষাণ গ্রেওয়ালের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকতে তাঁর হরিয়ানার ভিওয়ানির বাড়িতে যান। তিনি ছাড়াও আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব ও তৃণমূলের তরফে ডেরেক ও'ব্রায়েন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে সন্ধ্যায় যন্তরমন্তরে ফের প্রতিবাদ জানাতে এলে রাহুলকে আটক করা হয়।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপি নেতা ভিকে সিং বলেন, রামকিষাণ কংগ্রেস কর্মী ছিলেন। তিনি পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচনেও লড়েন। তাঁর পেন বিতর্কে কেন্দ্রে কোনও হাত নেই. ব্যাঙ্কের সমস্যায় তা এতদিন কার্যকর হয়নি। এছাড়া তাঁকে কে সালফাস ট্যাবলেট দিল সেটাও তদন্তের বিষয়। কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেন, রামকিষাণের মৃত্যু একটি আত্মহত্যা। তা তদন্তের বিষয়।
সুবেদার রামকিষাণের মৃত্যু
প্রসঙ্গত, সুবেদার রামকিষাণ গ্রেওয়াল মঙ্গলবার সালফাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন। বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর রাষ্ট্র হতেই রাজধানী জুড়ে বিক্ষোভ শুরু করে বিরোধী দলগুলি। তার জেরেই রাহুল গান্ধী ও আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে আটক করা হয় ও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিন সেই ঘটনার জেরেই ফের আটক হলেন রাহুল।