এটিএম যতই খালি থাকুক, মোদীর চালে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ভোটবাক্স ভরবেই
প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে ক্যাশ-নির্ভর আঞ্চলিক দলগুলির নির্বাচনী প্রচার যে যথেষ্ট ব্যাহত হবে, তা স্বীকার করে নিচ্ছে তারাই
সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কোনও শেষ না হলে কী হবে, আসন্ন উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে মোক্ষম চাল চেলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তা একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন বিরোধী থেকে বিশেষজ্ঞ সবাই।
রাজ্যের এক কংগ্রেস নেতা যেমন কবুল করেই নিয়েছেন যে তাঁদের এই নির্বাচনের কৌশল থেকে আবার শুরু থেকে ভাবনাচিন্তা করতে হবে কারণ ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল হয়ে যাওয়ার ফলে তাঁদের জনসভা আয়োজনের পরিকল্পনা বড় ধাক্কা খেয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনের সময়ে ভোটারদের নানা টোপ দেওয়ার যে কৌশল, তাও মার খেয়ে গিয়েছে এই নোট বাতিলের পদক্ষেপে।
কিনতু বিজেপিরও কি একই সমস্যা হবে না? ক্যাডারনির্ভর পার্টি হওয়ার কারণে এবং কেন্দ্রে শাসক দল হওয়ার দরুন বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার অনুদান পাওয়ার হেতু বিজেপিকে এই ঝামেলা অপেক্ষাকৃতভাবে কম পোহাতে হবে। আর এই সুবিধার কারণে যদি বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ভালো আশা করতে পারে, তবে তা মোদীর ২০১৯-এর লোকসভার পরিকল্পনাকে অনেকটাই উপকৃত করবে।
দিল্লির একটি বিশ্লেষক সংস্থা জানিয়েছে নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি নগদ টাকার উপর অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির থেকে কম নির্ভরশীল। আর উত্তরপ্রদেশে বিজেপির মুখ্য বিরোধী দল যারা সেই সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টির কাছে এ এক বড় ধাক্কা।
অর্থনৈতিক বিচারে এই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত অনেক মহলকেই অসন্তুষ্ট করলেও রাজনীতিটির মঞ্চে এর উপকারিতা নিয়ে প্রশ্ন বেশি কেউ তুলছেন না। নির্বাচনে কালো টাকার দুর্নীতিতে সাধারণ যে ভোটার বিরক্ত, সেও এটিএম থেকে নিজের টাকা না পাওয়ার দুঃখ অনেকটাই ভুলে যাবে রাজনৈতিক দলগুলির 'কষ্ট' দেখে বলে অনেকেরই মত। আর এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তাঁর গেরুয়া বাহিনী।
সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টির নেতৃত্ব এখন চেষ্টা করছেন বড় জনসভা না করে দ্বারে দ্বারে ছোট প্রচার চালিয়ে যতটা সম্ভব প্রচার চালানোর। যদিও দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো ছাড়া আর উপায় নেই তাদের, কিনতু আসন্ন মহাভারতে বিজেপিকে তো আর বিনা লড়াইয়ে সুচাগ্র মেদিনীও তারা ছেড়ে দিতে পারে না।
তবে বিজেপির বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি নির্বাচনের সময়ে যাদের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে ওঠে, সেই ইভেন্ট ম্যানেজাররাও পড়েছেন বেশ বিপাকে। রাজায় রাজায় লড়াইতে তাদের অবস্থা নেহাত উলুখাগড়ার মতো। তাদের কথা আর কেই বা ভাবছে?