(ফটো ফিচার) 'সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট' নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একনজরে
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর মুকুটে যোগ হল নতুন পালক। মহাকাশে উৎক্ষেপিত হল 'সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট'। যার পোশাকি নাম- 'জিস্যাট-৯'। এই উপগ্রহ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য একনজরে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর মুকুটে যোগ হল নতুন পালক। মহাকাশে উৎক্ষেপিত হল 'সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট'। যার পোশাকি নাম- 'জিস্যাট-৯'। শুক্রবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় ইসরোর সতীশ ধবন স্পেস সেন্টারের দ্বিতীয় লঞ্চপ্যাড থেকে এর সফল ভাবে উৎক্ষেপণ হল। এই উৎক্ষেপণের কাউন্টডাউন শুরু হয় বৃহস্পতিবার দুপুরে। 'সার্ক'-এর ৬টি প্রতিবেশী দেশের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপ্লব ঘটাতে মহাকাশে এই সর্বাধুনিক উপগ্রহটি পাঠাল ভারত।[এবার মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ইসরো]
এই উপগ্রহটি মহাকাশে কার্যকরী থাকবে ১২ বছর, ২০২৯ সাল পর্যন্ত। উৎক্ষেপণের পর ইসরোর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আসুন একনজরে জেনে নেওয়া যাক এই উপগ্রহ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য একনজরে।[২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে শক্তির যোগানের মূল উৎস হবে চাঁদ]
মন কি বাতে উৎক্ষেপণের ঘোষণা মোদীর
গত ৩০ এপ্রিলের মন কি বাত অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময়ে এই উপগ্রহের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানান উপগ্রহ উৎক্ষেপণের কৃতিত্ব একা ভারতের নয়, প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়েই ভারত মহাকাশ গবেষণায় এগিয়ে যাবে।[ইসরোর এই ১০টি সাফল্য গর্বিত করেছে গোটা ভারতকে]
উপগ্রহর ওজন ২২৩০ কেজি
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহটির ওজন ২২৩০ কেজি। এই কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটটি তৈরিতে সময় লেগেছে মোট ৩ বছর।[(ছবি) ইসরোর উপগ্রহ উৎক্ষেপণ নিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি তথ্য]
খরচ ২৩৫ কোটি টাকা
ইসরোর তৈরি এই উপগ্রহ তৈরিতে খরচ পড়েছে ২৩৫ কোটি টাকা। এবং পুরো প্রকল্পের খরচ ৪৫০ কোটি টাকা।[ইসরোর 'স্পেস শাটল' নিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি অবশ্যই জেনে নিন]
ভিতরে রকেট বহনে সক্ষম
এই উপগ্রহের ভিতরে ৫০ মিটার লম্বা রকেট যার ওজন ৪১২ টন টা বহন করা সম্ভব হবে বলে ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
জিএসএলভি-র মাধ্যমে উৎক্ষেপণ
এদিন জিও সিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ বা জিএসএলভির মাধ্যমে উপগ্রহকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের উন্নয়নের পথে এটা বড় পদক্ষেপ বলে সকলে মনে করছেন।
উপগ্রহের কাজ
উপরে অবস্থান করে ভূ-পর্যবেক্ষণ, খনিজ পদার্থ, জলের ভাণ্ডারের সন্ধান, এমনকী প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসেও এই উপগ্রহ বড় ভূমিকা নিতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের অগ্রগতি
পাকিস্তান ছাড়া শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের কাছেও পূর্ণ সময়ের কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট রয়েছে। চিনের সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই উপগ্রহগুলি তৈরি করেছে। তবে আফগানিস্তান ভারতের তৈরি পুরনো স্যাটেলাইট ইউরোপ থেকে কিনেছে। এই পথ ধরে এই বছরের মধ্যেই বাংলাদেশও স্যাটেলাইট তৈরির পথে এগিয়ে যাবে।
১২টি ট্রান্সপন্ডার
নতুন এই উপগ্রহে ১২টি Ku-Band ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। যা কমিউনিকেশনে বিশেষ সাহায্য করে। প্রতিটি দেশই অন্তত এর একটি করে ট্রান্সপন্ডারকে ব্যবহার করতে পারবে। প্রাথমিক পরিকাঠামো তৈরিতে ভারত বাকীদের সাহায্য করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে।
উপগ্রহে হট লাইন
এই উপগ্রহ ভারত বাদে নেপাল, ভূটান, মলদ্বীপ, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানকে সাহায্য করবে। সহযোগী দেশগুলির জন্য স্যাটেলাইটে হট লাইনও থাকবে। যার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা বিশেষ সঙ্কেত দেবে।
পাকিস্তানের পিছিয়ে আসা
এই মহাকাশ গবেষণা প্রকল্পের অংশ হওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানেরও। তবে তাদের নিজস্ব মহাকাশ প্রকল্প রয়েছে এতে অংশ নেয়নি তারা। যদিও ঘটনা হল পাকিস্তানের পাঁচটি উপগ্রহ থাকলেও তা মহাকাশে উৎক্ষেপণ করার মতো হেভি ডিউটি লঞ্চার ও ফ্যাব্রিকেশনের সুবিধা প্রতিবেশী দেশের হাতে নেই।