বাংলার এই দীর্ঘ দৈর্ঘ্যের নির্বাচন কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বড় ধাক্কা?
বাংলার ৬ দফার (প্রথম দফাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে, নয়তো মোট ৭ দফা) হাইভোল্টেজ নির্বাচন মাঝপথ অতিক্রম করে গিয়েছে। তৃতীয় দফার নির্বাচনও শেষ। চারদিনের নির্বাচনের মধ্যে গতকাল অর্থাৎ ২১ এপ্রিলের নির্বাচন ঘিরেই সবচেয়ে বেশি অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনের দিন ও নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।[মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল এবছর নির্বাচনে হেরে গেলে কী হতে পারে?]
বাকি তিনটি দফায় আরও ১২৭টি আসনে নির্বাচন হবে, যার মধ্যে ১০২টি কেন্দ্র কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় রয়েছে। শাসক দল তৃণমূল ২০১১ সালে এই আসনগুলির মধ্যে ৮৫টি আসনে জিতেছিল। শতাংশের হিসাবে যা ৮৩ শতাংশ। বাকি ১৬৭টি আসেনের মধ্যে ৯৯ টি আসন জিতেছিল তৃণমূল যা ৫৯ শতাংশ।
দক্ষিণবঙ্গে
নিজেদের
শক্তি
বজায়
রাখতে
মরিয়া
তৃণমূল
বড়
বড়
দাবি,
ল্যান্ড
ব্যাঙ্কের
আশ্বাস
দেও
হলেও
রাজ্যে
শিল্পের
উন্নয়ন
সেভাবে
সার্বিকভাবে
চোখে
পড়েনি।
সিঙুরের
মানুষ
নতুন
শিল্পের
অপেক্ষায়
থাকলেও
আশাহত
হওয়া
ছাড়া
ভাগ্যে
সেভাবে
বলতে
কিছুই
জোটেনি।
দৈনন্দিন
চাহিদাটুকু
মেটাতেই
হিমশিম
অবস্থা।
তার উপর সারদা চিটফান্ড, নারদ স্টিং অপারেশন-এর মতো কাঁটা তো রয়েছেই। তৃণমূল নেতৃত্ব আঁচ করতে পারছে এই দুর্নীতি ইস্যুগুলি শহুরে ভোটারদের ভোটে প্রভাব ফেলবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষীণ হওয়া দাপুটে আওয়াজ, জনতার কাছে তাঁর কাতর আবেদন স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীও দক্ষিণবঙ্গ নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন। [সি ভোটার-ইন্ডিয়া টিভি জনমত সমীক্ষা : ১৫৬ টি আসনে জিতে ক্ষমতায় আসবে তৃণমূলই]
সীমিত
সংগঠন
এবং
মুখের
জেরে
দীর্ঘ
মেয়াদী
নির্বাচনে
ব্যাকফুটে
দল
সুসংগঠিত
ও
সুষ্ঠুভাবে
ভোট
প্রক্রিয়া
শেষ
করার
জন্য
নির্বাচনের
সময়টা
বড্ড
বেশি
(ভোট
শুরু
হয়েছে
৪
এপ্রিল
থেকে
শেষ
হবে
৫
মে)।
দলের
হয়ে
প্রচারের
একমাত্র
মুখ
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলের
অন্যান্য
প্রার্থীদের
প্রচারে
রাজ্যের
এপ্রান্ত
ওপ্রান্তে
দৌড়ে
বেড়াতে
হচ্ছে
তাঁকে।
কারণ
জনসভাতে
লোক
সেভাবে
লোক
টানতেও
অক্ষম
স্থানীয়
নেতারা।
একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত দলের একাধিক নেতামন্ত্রীকা। দলের সততার মুখ হয়েও দলের প্রতি আস্থা জনগনের কাছে জিইয়ে রাখতে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে নেত্রীকে। তারউপর যত বেশিদিনের ভোট হবে, তত বেশি হিংসা, অশান্তির ঘটনা ঘটবে। যা সরাসরি শাসক দলের ইমেজকেই আঘাত করবে। [আদর্শ বিকিয়ে কখনও জোট করিনি, ভুল করছে সিপিএম-কংগ্রেস, হুঙ্কার মমতার!]
যত সময় যাবে তত মেজাজ ও ধৈর্য হারাতে থাকবেন দলনেত্রী তা জানেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও। আপাতত যে পরিস্থিতিতে রয়েছে দল তাতে দলনেত্রীর একটি ভুল পদক্ষেপও দলকে একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারে।
মুখে ছয় হলেও আদতে ৭ দফার এই নির্বাচনে মমতা অসন্তোষের যথেষ্ট কারণ আছে
আদতে ৭ দফার নির্বাচনে অসন্তোষ প্রকাশ করতে গিয়ে মমতা যতই বলুন না কেন যে অন্য় রাজ্যে যেখানে এক-দু দফার ভোট হচ্ছে সেখানে বাংলার সঙ্গে ৭ দফার নির্বাচন দিয়ে বৈমাত্রিকসুলভ আচরণ করা হচ্ছে, আসলে, মমতা ভালই জানেন নির্বাচনের মেয়াদ যত বড় হবে তার পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা তত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। [জনমত সমীক্ষা : জোট হলে তৃণমূল পাবে ১৮২ টি আসন, না হলে ১৯৭টি]
২০১১ সালেও একাধিক দফার নির্বাচন হয়েছিল, কিন্তু মমতা জন্য সময়তা তখন ভালো ছিল। পাঁচ বছর পর পরিস্থিতি কিন্তু মোটই ততটা অনুকূল নয় মমতার জন্য। হারানোর জন্য অনেককিছুই রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের।