সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ কি তৈরি করা? ইঙ্গিত কিন্তু সেরকমই
সারা দেশে সোয়াইন ফ্লু (এইচ১এন১) নিয়ে মারাত্মক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রায় ১৮০০ জন মানুষ এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন যা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই ভয়ের সঞ্চার হয়েছে।
ফি দিন মৃতের সংখ্যা বাড়ছে এবং সেই তুলনায় পথ্যের যোগান খুবই সীমিত। এর পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমও নানা খবরে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা ছাড়া আর কিছুই করছে না।
যেভাবে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, যেভাবে সবাই মিলে এই একটি রোগ নিয়ে ভাবছে, তা কি যথাযথ? অর্থাৎ ততটাও কি ভয়ের কারণ রয়েছে আমজনতার? সোয়াইন ফ্লু ছাড়াও আরও বহু রোগের কারণে নিত্যদিন শ'য়ে শ'য়ে মানুষ মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছেন। সেদিকে আমরা খেয়াল করছি কি? সেগুলিও কি সোয়াইন ফ্লুয়ের মতো মিডিয়ার প্রচার পাচ্ছে, এটাই এখন আসল প্রশ্ন।
সারা দেশে প্রতিদিন সোয়াইন ফ্লুয়ের আতঙ্ক বাড়ছে। বাড়ি থেকে বেরলেই দেখা যাচ্ছে রাস্তায় বেরনো মানুষজন মাস্ক পরে ঘুরছেন। অথবা ডাক্তারদের চেম্বারের সামনে লম্বা লাইন, সবার মুখে একটাই প্রশ্ন, "আমার জ্বর হয়েছে, এটা সোয়াইন ফ্লু নয় তো?" ঠিক এতটাই আতঙ্ক তৈরি করেছে এই রোগ।
সাধারণ মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলা ছাড়া বা সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্ক তৈরি করা ছাড়া মিডিয়া আর কিছুই করছে না। কীভাবে?
বলা হচ্ছে যে সারা দেশে ৩১ হাজারের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ১৮০০-র বেশি মানুষ। সংখ্যাগুলি নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। তবে একইসঙ্গে সংবাদমাধ্যম কি সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের পরিসংখ্যানটাও তুলে ধরছে? বিনা চিকিৎসায় অথবা নামমাত্র চিকিৎসায় অসংখ্য মানুষের সুস্থ হয়ে ওঠার ছবিটা কিন্তু তুলে ধরা হচ্ছে না।
পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, ভারতে আক্রান্তের মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ এর বলি হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ০.০২ শতাংশ মানুষ মারা যান, ভারতে শতাংশের হিসেবে তা কিছুটা বেশি হলেও আসল কারণটা হল আমাদের এখনও সেই পর্যায়ের পরিকাঠামো তৈরি নেই। তা সত্ত্বেও আমাদের মাত্রাতিরিক্ত আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ রয়েছে কি?
সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে জরুরি পথ্য ও নানা সহযোগী সামগ্রী বিক্রি করাই আসল উদ্দেশ্য নয় তো? টিবি, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া, অ্যানিমিয়া, এইডস ইত্যাদিতে এর চেয়ে ঢের বেশি মানুষ মারা যান। অথচ তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে মাথা ঘামাতে দেখা যায় না। এই সব মারণ রোগের পথ্য সরকারি ভর্তুকি সহ কম দামে পাওয়া যায় বলেই কি তা নিয়ে প্রচারে অনিহা থাকে সংবাদমাধ্যম ও কিছু শ্রেণির মানুষের? প্রশ্ন কিন্তু উঠছেই।