ক্রমেই সমর্থন হারাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
দিল্লি থেকে কী কড়া বার্তা নিয়ে ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? সারদাকাণ্ডের বিভিন্ন তদন্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের অন্যান্য সহকর্মীরা যেভাবে প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছিলেন তাতে সবাই আশ্চর্য।
মমতার দিল্লি যাওয়ার আগে মদন মিত্রের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূল নেতারা যেন নিঃশ্বাসেই অগ্নিবর্ষণ করছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি থেকে ফিরে আসার পর এই একই ইস্যুতে তৃণমূলের দৃষ্টিভঙ্গি যেন হঠাৎ করে পাল্টে গিয়েছে। মদন মিত্রর গ্রেফতারি নিয়ে বিশাল যে ধর্ণা মঞ্চে প্রতিবাদ কমর্সূচি গ্রহণ করেছে তা আচমকাই বন্ধ করে দেওয়া হল। আর তা হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর সেরে ফিরে আসার ঠিক পরেই।
কী
বার্তা
ছিল?
এই
বিষয়টি
স্পষ্ট
হয়ে
গিয়েছিল
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়
একটি
কারণ
নিয়েই
দিল্লিতে
গিয়েছিলেন।
সারদা
থেকে
বর্ধমানের
খাগড়াগড়
কাণ্ডে
তৃণমূল
সরকার
বেশ
কোণঠাসা
হয়েছে।
কারণ
এক্ষেত্রে
তদন্তকারীরা
এমন
অনেক
তথ্যই
পেয়েছে
যা
তৃণমূলের
বেশ
কিছু
নেতা-মন্ত্রীদের
বিরুদ্ধেই
অভিযোগের
আঙুল
তুলছে।
দলের নেতা ও মন্ত্রীদের একে একে জেলে যেতে দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মদন মিত্রের জেলে যাওয়াটা একেবারে পা থেকে মাথা পর্যন্ত নাড়িয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কারণ সিবিআই যে ক্রমেই দলের মাথাদের দিকে এগোচ্ছে তা ভালই বুঝতে পেরেছন মমতা।
একটি কারণ নিয়েই দিল্লি গিয়েছিলেন মমতা। দিল্লিতে গিয়ে বেশ কিছু নেতা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করা, সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ ডানানো এবং কেন্দ্র যে ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর দলকে নিশানা বানাচ্ছে তা নিয়ে আওয়াজ তোলা।
যদিও মমতাকে আগেই স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল সংসদে তৃণমূল নেতারা যে ব্যবহারের প্রদর্শন করছিলেন এবং রাস্তায় নেমে যেভাবে সিবিআই-এ বিরোধিতা করছিলেন তাতে ভুল বার্তা গিয়েছে। জিনিসটা এমনভাবে সামনে এসেছে যে সারদা কাণ্ডের তদন্তে বাধা দিতে চাইছেন মমতা একইসঙ্গে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
প্রতিবাদ
প্রত্যাহার
যেভাবে
মদন
মিত্রের
গ্রেফতারির
বিরুদ্ধে
তৃণমূলের
ধর্ণামঞ্চ
থেকে
প্রতিবাদ
ঝাপসা
হল
তা
বেশ
মজার।
পার্থ
চট্টোপাধ্যায়ের
ঘোষণার
পরই
আচমকা
তুলে
নেওয়া
হল
ময়দানের
প্রতিবাদ।
মদন মিত্রর গ্রেফতারির প্রতিবাদে প্রত্যেকদিন ৭ ঘন্টা করে ধর্ণায় বসার পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরে আসার পরে পার্থবাবু তাড়াহুড়ো করে ধর্ণামঞ্চে পৌছন এবং ধর্ণা তুলে নেওয়ার কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা করেন। ছিল তো হাতে গোনা লোক। তাও পার্থবাবু বলেছিলেন শুধু একটা জায়গায় প্রতিবাদকে আটকে রাখা যাবে না, এবার জেলাস্তরে আন্দোলন শুরু করবে তৃণমূল। এবার জেলাতে ধর্ণামঞ্চের সূচনা করা হচ্ছে।
সমর্থনের
অভাব
তৃণমূল
কংগ্রেস
অনুভব
করতে
পেরেছে
এক্ষেত্রে
খুব
একটা
সমর্থন
পাচ্ছে
না
তারা।
পশ্চিমবঙ্গের
মানুষ
স্পষ্টতই
এই
গোটা
বিষয়টিতে
অসন্তুষ্ট।
সাধারণ
মানুষের
কথায়,
ওড়িশার
মতো
রাজ্যেকেও
একই
ধরণের
কেলেঙ্কারির
জন্য
সমস্যার
সম্মুখীন
হতে
হয়েছে।
কিন্তু
নেতারা
যেহেতু
অবাধ
ও
স্বচ্ছ
তদন্ত
চান
তাই
এবিষয়ে
তারা
একটাও
কথা
বলেননি।
একইসঙ্গে তাদের বক্তব্য বরং এটা অনেক সম্মানীয় হত যদি সরকার নিজের ভুল স্বীকার করে নিত বা অন্ততপক্ষে তদন্তে সহযোগিতা করত। প্রতিবাদ করায় বা সংসদে কার্যপ্রণালী বন্ধ করে দিলে সমস্যার সমাধান বেরবে না। বরং সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়বে। এর ফলেই পশ্চিমবঙ্গের সমস্যাও সংসদে তোলা হচ্ছে না। এর জন্য দায়ী তৃণমূলই।
আম
জনতার
অন্তর্ধান
মদন
মিত্রের
সমর্থনে
দুটি
মিছিলের
আয়োজন
করা
হয়েছিল।
যেখানে
হাতে
গোনা
কয়েকজনকেই
দেখা
গিয়েছে।
১৩
ও
১৫
ডিসেম্বর
এই
দুটি
মিছিল
তৃণমূলের
চোখে
আঙুল
দিয়ে
দেখিয়ে
দিয়েছিল
মানুষ
আর
এই
সব
বিষয়কে
সমর্থন
করছে
না।
খুব
হাল্কাভাবে
তারা
বিষয়টি
দেখছেও
না।
মানুষের
দৃষ্টিভঙ্গি
পাল্টাতে
শুরু
করেছে।
মানুষ
ভাবছে
তৃণমূল
নিজেদের
ভুল
ঢাকার
চেষ্টা
করছে।
ধর্ণা মঞ্চে হাতে গোনা কয়েকজন ছিল। পার্থবাবু যখন ধর্ণা তুলে নেওয়ার সরকারি ঘোষণা করেন তাতে অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। একবার কেন এত তাড়াতাড়ি আন্দোলন কর্মসূচি তুলে নেওয়া হল তা না ভেবেই একবারও পিছনে ঘুরে না তাকিয়েই চলে আসেন আন্দোলনকারীরা।