ট্রাম্পের চোখে নারী স্রেফ মাংসের টুকরো: রিপাবলিকান প্রার্থীকে তুলোধোনা নিউ ইয়র্ক টাইমস সম্পাদকীয়তে
এবছরের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেকের চোখেই এখন ত্রাস। এক দশক আগেকার একটি টেপ যাতে ট্রাম্পের মহিলা-সম্পর্কিত জঘন্য সমস্ত উক্তি রয়েছে, তা ঝোলা থেকে বেরিয়ে পড়তেই ট্রাম্প সম্পর্কে যেন গোটা আমেরিকার দৃষ্টিভঙ্গিই বদলে গিয়েছে। আর কেউ কেউ তো নিউ ইয়র্কের এই ধনকুবের ব্যবসায়ীকে রীতিমতো করুণার চোখে দেখছে। এমনকী বলেও দিচ্ছে যে আগামী মাসের আট তারিখের মূল লড়াইতে ট্রাম্প পরাজিতই হবেন হিলারির বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (অক্টোবর ১১) নিউ ইয়র্ক টাইমস (এনওয়াইটি)-এর একটি প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে (ডোনাল্ড ট্রাম্পস স্যাড, লোনলি লাইফ) সেরকমই বলা হয়েছে। অথবা বলা যেতে পারে, সম্পাদকীয়র লেখক ডেভিড ব্রুকস ব্যক্তি ট্রাম্পকে রীতিমতো তুলোধোনা করেছেন।
"সাধারণত,
টাউন
হলের
বিতর্কসভায়
ভোটাররা
সরাসরি
সুযোগ
পান
পদপ্রার্থীদের
প্রশ্ন
করার।
এর
আগেও
দেখেছি
প্রার্থীরা
দর্শকদের
সঙ্গে
সামনাসামনি
কথা
বলছেন
।
এর
একটাই
কারণ,
জনসংযোগের
বড়
সুযোগ,"
এনওয়াইটি-র
সম্পাদকীয়তে
লিখছেন
ব্রুকস।
তিনি
এও
বলেন
যে
হিলারি
সাধারণত
লোকজনের
সঙ্গে
খুব
যে
ঘনিষ্ঠতা
দেখান
তা
নয়,
কিনতু
গত
রবিবার
(অক্টোবর
৯)
টাউন
হলের
রাষ্ট্রপতি
নির্বাচনের
বিতর্কসভায়
ট্রাম্পের
তুলনায়
তাঁর
পারফর্ম্যান্সও
অনেক
ভালো
ছিল।
"ট্রাম্প যখন উত্তর দিচ্ছিলেন, মনে হচ্ছিল ওই দেওয়ার জন্যই দেওয়া। তাঁর জবাবের মধ্যে কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল বলে মনে হয়নি। একজন কমবয়সী মুসলমান মহিলার সঙ্গে বাৰ্তালাপের সুযোগ পেয়েও ট্রাম্প তা কাজে লাগাতে পারেননি। এই যে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হওয়া, এতেই বোঝা যায় ট্রাম্প কতটা একা, অসহায়," বলেন ব্রুকস।
ট্রাম্পকে আরও তুলোধোনা করে প্রথম সারির দৈনিকটি বলে রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ তৈরি হয়, কিনতু ডোনাল্ড ট্রাম্প এব্যাপারে সম্পূর্ণই ব্যর্থ। "ট্রাম্পের কোনও পরামর্শদাতা বা বনধু কেউ নেই । ওঁর প্রচার দলে যাঁরা রয়েছে তাঁরা নেহাত কিছু ভাড়াটে সৈনিক । এমনকি, ট্রাম্পের নিজের দলের কাছেও তিনি এমন এক দুর্গন্ধ যার থেকে কোনও পরিত্রান নেই," বলেন ব্রুকস।
আর ট্রাম্প যে একা তা তাঁর মধ্যরাত্রে টুইটের মাধ্যমে রোষপ্রকাশ দেখেই বোঝা যায়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে প্রাক্তন ভেনিজুয়েলান বিশ্বসুন্দরী এলিসিয়া মাশ্যাডোর প্রতি ট্রাম্পের অপমানজনক আচরণের কথা হিলারি প্রথম বিতর্কসভায় উত্থাপন করার পর রিপাবলিকান পদপ্রার্থী মাঝরাতেও সে প্রসঙ্গে টুইটে আক্রমণ শানাতেই থাকেন।
"ট্রাম্পের প্রতি করুণা হয়"
ব্রুকস আরও বলেন: "ট্রাম্প নিজেকে নিজেই প্রতিদিন ছাপিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর প্রচারের নমুনা দিন দিন যত নামছে, আমার তাঁর প্রতি করুণা আরও বাড়ছে।"
ট্রাম্পকে নার্সিসিজম-এর রুগী অভিহিত করে লেখক বলেন: "এঁরা নিজেদের সূক্ষানুভূতিগুলি বুঝতে ব্যর্থ তাই অন্যকে বোঝার মতো মানসিকতা এঁদের নেই । নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে এঁরা চায় ক্রমাগত প্রচারের আলোয় থাকতে । অর্থ, সৌন্দর্য, খ্যাতি ইত্যাদিই এঁদের কাছে বেঁচে থাকার পাথেয়।"
"নারী তাঁর কাছে মাংসের টুকরো"
মহিলাদের প্রতি ট্রাম্পের নির্দয় মনোভাবেরও বিন্যাস করেছেন ব্রুকস। তাঁর কোথায়, নারীর সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্কও স্থাপন করা যায় কিনতু ট্রাম্পের অস্বাভাবিকতা তাঁকে শিখিয়েছে নারীকে ছোট করতে, অপমান করতে । "ট্রাম্পের নারী সঙ্গের বর্ণনা শুনলে মনে হয় তাঁর চোখে নারীর পরিচয় স্রেফ মাংসের টুকরো হিসেবে," পরিষ্কার মত ব্রুকসের।
"হারার পরের দিন ট্রাম্পের দিকে কেউ ঘুরেও তাকাবে না"
ব্যক্তি ট্রাম্পকে তুলোধোনা করে অবশেষে লেখক জানান: "ট্রাম্প যেদিন হারবেন তার পরের দিন, অর্থাৎ ৯ই নভেম্বর ট্রাম্প অতীত হয়ে যাবেন। কেউ তাঁর প্রতি সহমর্মিতা বা বিতৃষ্ণা, কিছুই দেখাবে না। চুপচাপ যে যার রাস্তায় চলে যাবে।