(ছবি) গত এক দশকে দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ মাওবাদী হানা একনজরে
বিহার,ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ছত্তিশগড়েরও বিভিন্ন এলাকা মাও হামলার শিকার হয়েছে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেই সমস্ত ঘটনা।
একের পর এক মাওবাদী হানায় বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এদেশ। বিশেষত পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব ভারতের বিশাল একটা অংশে ছড়িয়ে রয়েছে মাওবাদের বড় জাল। ইতিহাস বলছে ২০০৪ সাল থেকে তিলে তিলে তৈরি হয় সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠন। রাষ্ট্র বিরোধিতাকে উদ্দেশ্য করে নিজেদের লড়াই শুরু করে পিপলস্ ওয়ার গ্রুপ ও মাওইস্ট কমিউনিস্ট সেন্টার।
ধিরে ধিরে নিজেদের সামরিকভাবে সমর্থ করতে থাকে মাওবাদীরা। মাওবাদীদের সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি নামে পরিচিত। প্রায় ৬ থেকে ৯ হাজার মাও সেনা এই বাহিনীতে রয়েছে। যারা বিভিন্ন সময়ে একের পর এক হামলা চালিয়েছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওপর। প্রায় ৩০০০ মানুষ এপর্যন্ত মারা গিয়েছেন এদেশের একের পর এক মাও হামলায়। বিহার, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ছত্তিশগড়েরও বিভিন্ন এলাকা এই মাও হামলার শিকার। শুধু গতকালের ঘটনাই নয়, এর আগেও বহুবার মাও হামলা ঘটেছে দেশের নানা অংশে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেই সমস্ত ঘটনা।
২০০৭ এর মাও হানা
২০০৭ সালের মার্চ মাসে ছত্তিশগড়ের রানিবোদী গ্রামে ৫০০ জন মাওবাদী আক্রমণ করে একটি পুলিশ আউটপোস্ট। যে ঘটনায় শহীদ হন ৫৫ জন পুলিশ কর্মী। এদের মধ্যে ২৪ জন জন ছিলেন রাজ্য পুলিশের কর্মচারি। আর বাকি ৩১ জন ছিলেন স্পেশাল পুলিশ অফিসার। জানা যায়, পুলিশ আউটপোস্ট টিতে বোমা ও গ্রেনেড নিয়ে হামলা করে মাওবাদীরা। এছাড়াও ওই একই বছরের অক্টোবর মাসে মাও হানায় ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডির ছেলে অনুপ মারান্ডি সহ ১৭ জন পুলিশ মারা যান মাও হামলায়।
২০০৮ সালের মাওবাদী আক্রমণ
২০০৮ সালের ২৯ জুন মাওবাদীরা বালিমেলা রিজার্ভারে একটি নৌকাকে আক্রমণ করে। নৌকায় ছিলেন ৪ জন পুলিশ ,সঙ্গে ছিল ৬০ টি গ্রেহাউন্ড কম্যান্ডো। এরপর, ১৬ জুলাই মাওবাদীরা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয় একটি পুলিশ ভ্যান। সেই ঘটনায় মারা যান ২১ জন। ওড়িশার মালকানগিরির এই ঘটনাই শেষ নয়।
২০০৯ সালের মাও হামলা
মহারাষ্ট্রের গান্দচিরোলির জঙ্গলে ২০০৯ সালে মাও হামলায় মারা গিয়েছিলেন ১৬ জন পুলিশ অফিসার। সেটি ছিল মে মাসের ঘটনা। এরপর অক্টোবর মাসেও আরেকটি মাও হামলা এলাকায় হয় বলে জানা গিয়েছিল। যে ঘটনায় প্রায় ১৭ জন পুলিশ অফিসার মারা যান।
২০১০ সালে একের পর এক মাও হামলা
এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ, ইস্টার্ন ফ্রন্টায়ার রাইফেলের ২৪ জন সেনা মাও হামলায় মারা যায়। ওই একই বছরে ২৬ জন সিআরপিএফ জওয়ান মাও হামলায় মারা যান, ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুরে। যএ ঘটনা এখনও পর্যন্ত মাও হামলার সবচেয়ে রক্তাক্ত নির্দশন। ২০১০ সালেরই এপ্রিল মাসে ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়ায় ৭৫ জন সিআরপিএফ সেনা মারা যান মাওবাদীদের আক্রমণে।
২০১৩ সালের মাও হামলা
এঘটনাও ছত্তিশগড়ের। সেখানের কংগ্রেস পার্টির ২৫ জনকে হত্যা করে মাওবাদীরা। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ছত্তিশগড় কংগ্রেস পার্টির প্রধান নন্দ কুমার পটেল। ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ছত্তিশগড়ের প্রাক্তনমন্ত্রী মহেন্দ্র কর্মা।
২০১৪ সালেও ক্রমাগত চলে মাও হামলা
ছত্তিশগড়ের সুকমায় ১৫ জন সিরাপিএফ জওয়ানকে নৃশংশভাবে হত্যা করা হয় ২০১৪ সালে।
২০১৭ -এর ছত্তিশগড়ে মাও হামলা
গত মাসেই ১২ তারিখ ছত্তিশগড়ের সুকমায় ১২ জন সিআরপিএফ জওয়ানকে হত্যা করে মাওবাদীরা। যেঘটনার বিভীষিকা কাটতে না কাটতেই ফের একবার ২৪ এপ্রিল ২০১৭ -এ অতর্কিত মাও হামলা হল সিআর পিএফ-এর ওপর।