কেন মায়াবতীর বসপার হার উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ
আরও পাঁচ বছর ক্ষমতাহীন হয়েই কাটাতে হবে মায়াবতীকে। এবং এক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর নিজের ব্যক্তিগত ও দলের রাজনৈতিক কেরিয়ার কেমন হবে তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া ঝড়ে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বিরোধী দলগুলি। নরেন্দ্র মোদী ম্যাজিক একেবারে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেস জোট ও বহুজন সমাজ পার্টিকে। একেবারে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি ৩২০টির বেশি আসন দখল করেছে।
২০০৭ সালে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পরে বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতী এবছর ভেবেছিলেন ক্ষমতায় ফিরবেন। তবে সেগুড়ে বালি। এর আগেরবার সমাজবাদী পার্টি তাঁর হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছিল। আর এবারের নির্বাচনের পর বিজেপি তিন নম্বর আসনে ঠেলে দিল মায়াবতীর দলকে।
ফলে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতাহীন হয়েই কাটাতে হবে মায়াবতীকে। এবং এক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর নিজের ব্যক্তিগত ও দলের রাজনৈতিক কেরিয়ার কেমন হবে তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
যে দলিত রাজনীতি করে মায়াবতী বা মুলায়মের দল বারবার উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় ফিরে ফিরে এসেছে, সেই দলিতের একটা বড় অংশ এবার বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। যাদবদের একটা বড় অংশ বিজেপির উপরে ভরসা রেখেছে। আর এরকম চলতে থাকলে সপা-বসপার দলিত ভোটব্যাঙ্কেও আরও ধস নামবে।
গত কয়েক দশকে এই প্রথমবার বহুজন সমাজ পার্টি প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে আসতে পারল না। নেমে গিয়েছে একেবারে তৃতীয় স্থানে। বিধানসভায় বিরোধী দলেও মায়াবতীর দল বসতে পারবে না। বিরোধী দলের মর্যাদা পাবে সপা-কংগ্রস জোট।
এই প্রেক্ষিতে ক্ষমতা থেকে আরও পাঁচ বছর অর্থাৎ সবমিলিয়ে মোট দশ বছর মায়াবতী দূরে থাকবেন। এর প্রভাব তাঁর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কেরিয়ারে যেমন পড়বে, তেমনই দলের নেতা-কর্মীদেরও মনোবল ক্ষুণ্ণ হবে তা বলাই বাহুল্য।
ফলে বহুজন সমাজ পার্টিতে আগামিদিনে নতুন করে বিদ্রোহের পরিবেশ তৈরি হবে না বা দলে ভাঙন ধরবে না তা কেউ বলতে পারে না। তাছাড়া মায়াবতী এই ৬১ বছর বয়সে আরও পাঁচবছর ক্ষমতাচ্যূত থাকার পরে কতটা ভালোভাবে ফের ফিরে আসতে পারেন তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে উত্তরপ্রদেশের প্রথম দলিত মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হন মায়াবতী। এরপরে আরও তিনবার তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ সামলেছেন। শেষবার মুখ্যমন্ত্রী হন ২০০৭ সালে। তাঁকে হারিয়ে ২০১২ সালে ক্ষমতা দখল করেন অখিলেশ সিং যাদব।