গেরুয়া ঝড়ে বিধ্বস্ত : বেঁচেবর্তে আর একটিই বড় রাজ্য হাতে রইল কংগ্রেসের
এই মুহূর্তে কর্ণাটক বাদে দেশের আর কোনও বড় রাজ্যে কংগ্রেসের সরকার নেই। হয়ত রয়েছে বিজেপির, অথবা বামেদের অথবা কোনও আঞ্চলিক দলের।
উত্তরপ্রদেশ সহ মোট পাঁচটি রাজ্যের নির্বাচনে ভালো ফল করা বিজেপির জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছিল। রাজ্যসভায় আসন না বাড়লে আগামিদিনে সংসদে শক্তি বৃদ্ধিতে তা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াত। লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই জায়গাতেই সম্পূর্ণ দখলের মাধ্যমেই কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বিজেপি ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চাইছিল।
১৯৫২-২০১৭ : উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাস একনজরে
বিজেপির উত্তরপ্রদেশ জয় রাজ্যের নিরিখে সর্বকালের সেরা, বলছে পরিসংখ্যান
এদিকে এই পাঁচটি বিধানসভা নির্বাচন কংগ্রেসের কাছে ছিল অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ের মতো। সারা দেশে ধীরে ধীরে সাইন বোর্ডে পরিণত হয়েছে কংগ্রেস। সেই জায়গা থেকে নিজেদের টিঁকিয়ে রাখতে গেলে, বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা লড়াই ফিরিয়ে দিতে গেলে এই নির্বাচনে গা ভাসিয়ে থাকা কংগ্রেসের জন্য প্রয়োজন ছিল।
তবে পাঞ্জাব বাদে আর কোনও রাজ্য নিজেদের দখলে কংগ্রেস রাখতে পারেনি। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির হাত ধরেও ভরাডুবি আটকানো যায়নি। মাত্র ৭টি আসনে এসে ঠেকেছে। উত্তরাখণ্ডে সরকারচ্যূত হতে হয়েছে। মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে হয়েছে।
পাঁচ রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে কোন দলের কারা এগিয়ে? জেনে নিন
পাঁচ রাজ্য মিলিয়ে কোন প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ও কোন প্রার্থী সবচেয়ে কম ভোট পেলেন?
আর এসবের ফলে সারা দেশের রাজনৈতিক পরিসংখ্যান দাঁড়িয়েছে, এই মুহূর্তে কর্ণাটক বাদে দেশের আর কোনও বড় রাজ্যে কংগ্রেসের সরকার নেই। হয়ত রয়েছে বিজেপির, অথবা বামেদের অথবা কোনও আঞ্চলিক দলের।
কাশ্মীর থেকে কেরল গুজরাত থেকে অরুণাচল ধীরে ধীরে পুরো দেশ গেরুয়া রঙে সাজতে চলল। হাত প্রতীক প্রায় সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে। কর্ণাটক বাদে উত্তরে হিমাচল প্রদেশ আর উত্তর-পূর্বে মেঘালয়, মিজোরাম ও দক্ষিণে পুদুচ্চেরি ছাড়া সারা দেশে কংগ্রেস নিশ্চিহ্ন। এই তিনটি রাজ্যও এত ছোট যে সবমিলিয়ে আসন সংখ্যা তিনশোর গণ্ডীও ছাড়ায়নি।
হিমাচল প্রদেশে ৬৮টি বিধানসভা আসন, মেঘালয়ে ৬০টি, মিজোরামে ৪০টি ও পুদুচ্চেরিতে ৩০টি বিধানসভা আসন রয়েছে। যার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কংগ্রেস সরকারে রয়েছে। এবং এই রাজ্যগুলিতেও মূল লড়াইয়ের প্রতিপক্ষ সেই বিজেপিই। তাই আগামিদিনে এই রাজ্যগুলিতেও কংগ্রেসের ঘট উল্টে যাবে, এমন আশঙ্কাই বিশেষজ্ঞরা করছেন।
আগামী ২০১৮ সালে কর্ণাটক রাজ্যে বিধানসভা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে এই রাজ্যে বিজেপির প্রভাব বাড়ন্ত। বেঙ্গালুরু পুরসভা গতবছরে বিজেপি দখল করে নিয়েছে। এরাজ্যে ইয়েদুরাপ্পার নেতৃত্বে বিজেপি ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এরাজ্যে ফল কংগ্রেসের বিপক্ষে গেলে প্রায় সারা দেশে নিশ্চিহ্ন হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হবে দেশের সবচেয়ে পুরনো দলটির।
আপাতত পাঞ্জাবে ক্ষমতায় ফেরা কংগ্রেসকে স্বস্তিতে রাখলেও আগামিদিনে অস্বস্তি যে বাড়তে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।