ওয়ানইন্ডিয়া এক্সক্লুসিভ: তরুণদের উদ্দেশ্যে কালামের বার্তা 'জীবনের লক্ষ্য থামতে দিও না'
জনগনের 'রাষ্ট্রপতি' এবং ভারতের অনুপ্রেরণা তিনি। তিনি এপিজে আব্দুল কালাম। বুধবার ১৫ অক্টোবর ৮৩ বছর পূর্ণ করলেন তিনি। তাঁর নিজের শব্দে : "সূর্যের ৮৪ তম কক্ষপথে পা রাখলাম আমি।"
প্রাক্তন এই ভারতের রাষ্ট্রপতির জীবনযাত্রার কিছপউ হেরফের হয়নি। তিনি এখনও রাত ১ টা পর্যন্ত জেগে থাকেন, বই পড়েন, ভক্তদের মেইলের উত্তর দেন। জন্মদিনের দিন দিল্লির রাজাজি মার্গে ১০ নম্বর বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন এক দর্শনার্থী। তাঁর আবদারেই ওয়ানইন্ডিয়াকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হলেন কালাম।
প্রাক্তন এই রাষ্ট্রপতির কথায়, "প্রত্যেকদিন, প্রত্যেক মুহূর্ত আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক বছরের ১ জানুয়ারি আমি সারা বছরের আমার লক্ষ্য স্থির করে নিই। আর সেই হিসাবেই কাজ শুরু করু। আমার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমি যা পরিকল্পনা করেছিলাম তার ৬০-৭০ শতাংশই অর্জন করেছি। দেখতেই পাচ্ছ আমার লক্ষ্য কখনও থেমে থাকে না।"
জীবনের
আক্ষেপ
ভারতীয়
বায়ুসেনায়
যোগ
দেওয়ার
সুযোগ
হাতছাড়া
হওয়া
ছাড়া
জীবনে
আর
কী
আক্ষেপ
আছে
জানতে
চাওয়া
হলে
তাঁর
আক্ষেপ
রাষ্ট্রপতি
ভবনে
সৌরশক্তি
প্ল্যান্ট
প্রতিষ্ঠার
কাজ
শেষ
করতে
পারেননি
তিনি।
"আমার রাষ্ট্রপতি সময়কালে শেষের দিকে আমরা ৫০০০ মেগা ওয়াটের একটি সৌরশক্তি প্রকল্প রাষ্ট্রপতি ভবনে তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিলাম। আমি সবজায়গা থেকে অনুমতি পেয়ে গিয়েছিলাম এমনকী আর্থিক কোনও সমস্যাও ছিল না। কিন্তু যখন প্রস্তাবটি পরিবেশ দফতরে গেল তথন তারা ঔতিহাসিক মুঘল গার্ডেনের প্রসঙ্গ তুলে ধরল।"
"কর্তৃপক্ষ ভয় পেল এর ফলে মুঘল গার্ডেনের জাঁকজমক কিছুটা ধাক্কা খেতে পারে। আমি যখন কর্তৃপক্ষকে প্রত্যয়জনক উত্তর দিলাম, ততক্ষণে আমার রাষ্ট্রপতি জীবনকাল শেষ হয়ে গিয়েছিল রাষ্ট্রপতি ভবনে। আমি আমার লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। এখনও তার জন্য আক্ষেপ আছে।" বললেন ডঃ কালাম।
অবিবাহিত
জীবন
সরাসরি
প্রশ্ন
ছুঁড়ে
দিয়েছিলাম,
এখনও
অবিবাহিত
রয়েছেন,এর
পিছনে
কারণটা
কী?
২০০৬
সালে
সিঙ্গাপুরে
রাষ্ট্রপতি
সফরের
সময়
প্রথম
এই
প্রশ্নটা
এক
ছাত্র
জিজ্ঞাসা
করেছিলেন।
এতদিন
পরে
ফের
হাসলেন
সেই
প্রশ্নে।
কালামের কথায়, "(হাসি), এই প্রশ্নটা ৫০ বছরেরও বেশি পুরনো। ভারতে এমনকী ভারতের বাইরেও এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি আমি। আমি আগেও উত্তর দিয়েছি তাদের যে আমি যৌথ পরিবার থেকে এসেছি। আমার ভাইয়ের নাতনি রয়েছে। এমন দারুণ পরিবারে একজন বিয়ে করল কি করল না তা খুব এখটা বড় বিষয় না। তাছাড়া জীবনে কখনও অর্ধাঙ্গিনীর প্রয়োজন অনুভব করিনি।"
যুবশক্তি
গত
দু
দশক
ধকে
কালাম
বলেছেন,
১৬
লক্ষেরও
বেশি
ভারতীয়
যুবক-যুবতীদের
সঙ্গে
দেখা
করেছেন,
যাদের
কাঁধে
আগামী
দিনের
ভারতের
দায়িত্ব
রয়েছে।
কালামের
কথায়,
"ভারতীয়
যুব
সমাজ
কর্মঠ
এবং
কম
পক্ষপাতমূলক,
সবচেয়ে
বড়
কথা
তাদের
মধ্যে
একটা
ইচ্ছা
আছে
সমৃদ্ধ,
শান্তিপূর্ণ
ও
উন্নত
ভারতে
বসবাস
করার।
এখন
ভারতীয়
যুবসমাজ
জিজ্ঞাসা
করে,
'ভারতের
পরিবর্তন
এবং
উন্নয়নশীল
দেশে
পরিণত
করতে
আমরা
কী
করতে
পারি।'
এটা
আমার
কাছে
অত্যন্ত
অর্থবহ
ও
উল্লেখযোগ্য।"
উন্নয়নশীল
ভারত
২০২০
সালের
মধ্যে
ভারতকে
উন্নত
দেশে
পরিণত
করার
যে
স্বপ্ন
এই
বৈজ্ঞানিরক
দেখেন
তা
একমাত্র
একজোট
হয়ে
অর্জন
করা
সম্ভব
বলেই
তার
ধারণা।
তিনি
বলেন,
"আমরা
এই
প্রস্তাব
লোকসভায়
এবং
ক্যাবিনেটে
রেখেছিলাম
যে
আমাদের
ইন্ডিয়া
ভিশন
২০২০-র
প্রয়োজন
আছে।
২০২০
সালের
মধ্যে
ভারতকে
অর্থনৈতিকভাবে
উন্নত
করতে
লোকসভায়
প্রশ্নোত্তর-তর্ক
চলুক
এবং
দেখুন
কীভাবে
আমরা
২০২০
সালের
মধ্যে
আমাদের
লক্ষ্পূরণ
করি।"
"প্রথম প্রাধান্য হওয়া উচিত 'পুরা'- প্রোভাইডিং আরবান অ্যামেনিটিস ইন রুরাল এরিয়া বা গ্রামাঞ্চলে শহুরে সামগ্রী পৌছে দেওয়া। দ্বিতীয়, আমাদের কৃষকরা ২৫০ মিলিয়ন টন খাদ্য উৎপাদন করে, অথচ আমরা মূল্য সংযোজন করি না।মূল্য সংযোজন আর্থিক দিককে সচল করতে পারে এবং রপ্তানি ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। "
"আমরা ফল ও সবজি উৎপাদনে প্রথম সারিতে কিন্তু আমরা তার প্রক্রিয়াকরণ করি না, যেমন ফলের রস বা প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য। তৃতীয়ত, ভারতীয় অর্থনীতিতে মোট শিল্পের ৪০ শতাংশ অবদান ক্ষুদ্র শিল্প থেকে আসে।"
"এই ক্ষুদ্র শিল্প ও মাঝারি শিল্প শহর ও গ্রামাঞ্চলে লক্ষ লক্ষ রয়েছে। তার একটা সংসদীয় দৃষ্টিকোণ প্রয়োজন, যেমন কলাকৌশল, কম সুদে ঋণ, এনপিএ নীতিতে ছাড় ইত্যাদি। আমাদের উচিত এই ধরণের শিল্পর জন্য বৃদ্ধিভিত্তিক বিনিয়োগ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রদান। যাতে উৎপাদন বাড়ে এবং রপ্তানি ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।"
(লেখক প্রবীন সাংবাদিক, ভারতের প্রথম সারির মিলিটারি ব্লগের সঞ্চালকও বটে। Tarmak007,ওয়ানইন্ডিয়ার উপদেষ্টা সম্পাদক, টইটার অ্যাকাউন্ট @writetake)