মুভি রিভিউ 'রক অন ২': ম্যাড়ম্যাড়ে চিত্রনাট্যে 'রক' করলেন একমাত্র ফারহান
হলে রক অন ২ দেখতে দেখতে যদি মনে হয় পপকর্ন বা চিপস কিনতে বাইরে বেরতে হবে, নিশ্চিন্তে বেরতে পারেন, কয়েক মিনিটে কোনও কিছু মিস করবেন না।
অভিনয়
:
ফারহান
আখতার,
শ্রদ্ধা
কাপুর,
অর্জুন
রামপাল,
পুরব
কোহলি,
প্রাচী
দেশাই,
শশাঙ্ক
আড়োরা
পরিচালক
:
সুজাত
সওদাগর
প্রযোজক
:
ফরহান
আখতার,
রীতেশ
সিদওয়ানি।
লেখক
:
অভিষেক
কাপুর,
পূবালী
চৌধুরি
'রক অন'- নামের মধ্যেই কেমন যেন একটা রক্ত গরম করে দেওয়া ব্যাপার ছিল। রক অন ২ নিয়েও তাই বিশাল প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু প্রত্যাশাপূরণ তো দুরঅস্ত, এছবি থেকে প্রাপ্তি শুধুই হতাশা।
আট বছর আগে আনকোরা এক অভিনেতা তথা গায়ক ফারহান আখতার প্রথমবারেই বাজিমাৎ করে দিয়েছিলেন। তরুণ সমাজের উৎসাহকে এক তারে সফলভাবে বাঁধতে পেরেছিলেন পরিচালক অভিষেক কাপুর। ৮ বছর আগেকার সেই স্মৃতি আজও আমাদের চিন্তায় তরতাজা।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব পাল্টায়। পাল্টেছে 'ম্যাজিক ব্যান্ড'।
ছবির পটভূমি : আট বছর আগে যেখানে শেষ হয়েছিল গল্প সেখান থেকেই আবার শুরু হল আজ। কেডি মানে কিলার ড্রামার (পুরব কোহলি)-র ধারাভাষ্যে শোনা গেল আট বছর হয়ে গিয়েছে যখন ম্যাজিক শেষবার সিন্দবাদ গ্র্যান্ড পারফরম্যান্স দিয়েছিল।
বর্তমানে আদি অর্থাৎ আদিত্য শ্রফ (ফারহান আখতার) একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পর থেকেই সঙ্গীত ছেড়ে অনুশোচনায় ঘেরা একাকী। উত্তরপূর্ব ভারতের একটি ছোট গ্রামে নিজের অনুশোচনা নিয়েই দিন কাটাচ্ছে সে।
তবে জো ম্যাসকারিনা (অর্জুন রামপাল)-এর জীবনে বড় পরিবর্তন এসেছে। এখন সে সোয়াঙ্কি নাইট ক্লাবের মালিক এমনকী রিয়্যালিটি শো-এর সেলেব্রিটি বিচারক। জিয়া শর্মা (শ্রদ্ধা কাপুর)-র বাবার সঙ্গে সমস্যার জেরে নিজেকে সঙ্গীতের জগতেই ডুবিয়ে রাখতে চায়। তার সঙ্গী শরৎবাদক উদয় (শশাঙ্ক অড়োরা)। দুই তরুণ শিল্পীর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে জো তাদের নিজের নাইটক্লাবে পারফর্ম করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। যদিও শেষ মুহূজ্ঞতে সবাইকে চমকে দিয়ে জিয়া সরে দাঁড়ায়।
এইখান লুকিয়ে রয়েছে ছবির চমক যার কারণে ফের একবার ম্যাজিক ঐক্যবদ্ধ হবে রক অন করবে।
পরিচালনা : অভিষেক কাপুরের হাত থেকে এবার রক অন-এর দায়িত্ব নেন সুজাত। ম্যাজিককে অভিষেকের মতো করে এক সুতোয়া গাঁথতে পারেননি সুজাত বরং দড়ি দিয়ে গিঁট পাকিয়ে দিয়েছেন। না চরিত্রগুলিকে গুছিয়ে উঠতে পেরেছেন না তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। জটিলতা বেড়েছে আবেগ উন্মাদনা হারিয়েছে।
অভিনয় : এই ছবিতে অভিনয়ের সবচেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছেন ফারহান। অধিকাংশ সময়ই পর্দায় দেখা গিয়েছে 'আদি'কে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিনয়ে আরও পরিণত ফারহান। একাকীত্ব, অপরাধবোধ অদ্ভুৎ সুন্দরভাবে ফুটিয়েছেন ফারহান।
তবে কেডিকে এই ছবিতে আরও দেখতে পেলে ভাল লাগত। রক অন-এর জো সিকোয়েলে এসে শুধু অর্জুন রামপাল হয়েই রয়ে গেলেন। দর্শক এই ছবিতে জো-কে প্রচণ্ডভাবে মিস করবে।
শ্রদ্ধা কাপুর-কে রক অন এ দেখলাম না এবিসিডি-২ এ দেখলাম সেটাই যেন বুঝতে পারলাম না। খুব অল্প সমের জন্য সুযোগ পেলেও তার পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করেছেন শশাঙ্ক। প্রাচী দেশাইকে তো জোর করে ঢোকাতে হবে বলে এই ছবিতে ঢোকানো হয়েছে। প্রাচী না থাকলেও কোনও সমস্যা হত না এই ছবির।
গান : রক অন-এর আত্মা ছিল ছবির প্রত্যেকটি গান। সেখানেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে রক অন ২। একটাও গান মন ছোঁয় না।
সবশেষে এটাই বলা যায় যে রক অন ২ হতাশ করেছে ঠিকই কিন্তু শুধু ফরহানের জন্য এছবি দেখাই যায়।