'রঙ্গুন' রিভিউ : 'অ্যাকশনে' হোক বা 'ইমোশনে' এই ছবির আসল 'নায়ক' কঙ্গনা!
নিশ্চিতভাবে 'রঙ্গুন' বিশাল ভরদ্বাজের সেরা ছবি নয়, তবে শুধু কঙ্গনার জন্য এই ছবি বারবার দেখা যায়।
ছবি
:
রঙ্গুন
অভিনেতা
:
কঙ্গনা
রানাউত,
শাহিদ
কাপুর,
সঈফ
আলি
খান
পরিচালক
:
বিশাল
ভরদ্বাজ
প্রযোজক
:
সাজিদ
নাদিওয়াদওয়ালা,
বিশাল
ভরদ্বাজ,
ভায়াকম
১৮
মোশন
পিকচার্স
পটভূমি
১৯৪৩ সাল। ব্রিটিশরা হিটলারের বিরুদ্ধে লড়ছে। অন্যদিকে ভারতীয়রা দুই মতাদর্শের মধ্যে বিভ্রান্ত। একদিকে গান্ধীজির অহিংস নীতি অন্যদিকে সুভাষচন্দ্র বসু, যিনি বিশ্বাস করেন শত্রুদের হাতে প্রাণ দেওয়ার থেকে শত্রুদের শেষ করে দেওয়া উচিৎ।
এরইমাঝে চল্লিশের দশকের সাহসী অভিনেত্রী মিস জুলিয়া (কঙ্গনা রানাউত). যে ঝারবাতি ধরে ঝোলে, ট্রেনের মাথায় দৌড়ে বেড়ায় আর পর্দায় ধরা দিলে সবাইকে মাতিয়ে দেয়। পারসি ছেলে রুসি বিলিমোরিয়া (সঈফ আলি খান) মিস জুলিয়ার আবেশে বুঁদ।
ব্রিটিশ সেনা রুসিকে রাজি করায় ভারত-বর্মা সীমান্তে জুলিয়াকে পাঠাতে যাতে সীমান্তে যুদ্ধকারী সেনাদের উৎসাহ দিতে পারে জুলিয়া। তৎক্ষণাৎ জামাদার নবাব মালিকের (শাহিদ কাপুর) তত্ত্বাবধানে ও নিরাপত্তায় জুলিয়াকে ট্রেনে করে পাঠানো হয়।
এরপরই আসে গল্পে অন্য মোড়। একে অপরের সঙ্গে বয়ে যেতে থাকে জুলিয়া ও নবাব। কিন্তু ভারতে ফেরার জন্য বিভিন্ন বাধার বিরুদ্ধে লড়তে হয়। তারই মাঝে একে অপরের প্রেমে পড়ে জুলিয়া নবাব। কিন্তু দুজনের মাঝে রুসি ফিরে আসলে কী হবে? নবাব মালিক আসলে কে? এই প্রশ্নের উত্তরগুলি জানতে অবশ্য আপনাকে থিয়েটারে যেতে হবে।
পরিচালনা
বিশাল ভরদ্বাজের ছবি এবং তাঁর পরিচালনার দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন হয় না। তবে এই ছবি পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজের সেরা ছবিগুলির তালিকায় হয়তো জায়গা পাবে না তবুও কীভাবে অভিনেতা অভিনেত্রীদের থেকে সেরাটা বের করে নিতে হয় তা যে তাঁর নখদর্পণে সেকথা আরও একবার প্রমাণ করলেন বিশাল।
তবে চিত্রনাট্য নিয়ে বিশালের আরও যত্নবান হওয়া উচিৎ ছিল হয়তো। আবেগের দিক বিচার করলে এই ছবিতে অনেকটাই মাত খেয়েছেন বিশাল। ক্লান্তিকর আখ্যান বেশ কিছু জায়গায় ছন্দপতন ঘটিয়েছে। ওমকারা, মকবুল এমনকী হায়দায় ছবির ধারকাছ দিয়েও যেতে পারেনি এই ছবি।
অভিনয়
রঙ্গুন ছবির মধ্যমণি 'কুইন' কঙ্গনা। এই ছবির নায়ক কঙ্গনা বললেও ভুল বলা হবে না। প্রাণোচ্ছল সাহসী জুলিয়া হোক বা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা, দুর্বলতার চাদরে নিজেকে মুড়ে নেওয়া তরুণী, কঙ্গনা এককথায় অনবদ্য। একের পর এক ছবিতে নিজের অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। এই ছবি বক্স অফিসে সাফল্য পাক না পাক তাঁর অভিনয় জীবনের একটা মাইলস্টোন হয়ে যে থাকবে তাতে কোনও অন্তরায় নেই।
শাহিদ কাপুর নিজের সেরাটাই দিয়েছেন। হায়দার বা উড়তা পাঞ্জাব ছবিতে শাহিদের অভিনয় দেখার পর হয়ত ওঁর প্রতি প্রত্যাশাটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। সেই প্রত্যাশার পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছতে না পারলেও উপরে চড়তে থাকার চেষ্টায় সফল শাহিদ। এই ছবিতে শাহিদ একজন সৈনিক যে নিজেকে বাকিদের থেকে আলাদা সরিয়ে রাখে। তাঁর আবেগ প্রকাশের জায়গাটাই নেই। তবু কঙ্গনার সঙ্গে তাঁর কেমিস্ট্রি আপনাকে অন্যমনস্ক হতে দেবে না।
স্ক্রিনে খুব সীমিত দৃশ্যেই দেখা গিয়েছে সঈফকে। কিন্তু এই স্বল্প পরিসরেই নিজের সেরাটুকু দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সঈফ। সফলও হয়েছেন অনেকটা।
গান
বিশাল ভরদ্বাজের ছবির গানে আলাদা একটা চার্ম থাকে। তবে এই ছবিতে তারও কমতি রয়েছে। 'টিপ্পা' গানটি মন কাড়ে। তবে বাকি গানগুলি শুনতে ভাল লাগলেও মনে আলাদা করে দাগ কাটে না।
সবশেষে
নিশ্চিতভাবে এই ছবি বিশাল ভরদ্বাজের সেরা ছবি নয়, তবে শুধু কঙ্গনার জন্য এই ছবি বারবার দেখা যায়।