দেশভাগের নেপথ্যের আসল রহস্যময় রাজনীতিক কে, উত্তর খুঁজল 'পার্টিশন ১৯৪৭'
কথায় বলে ইতিহাস তাঁরাই লেখেন যাঁরা 'জয়ী' হন। পরাজিতদের ইতিহাস কখনও সামনে আসে না। দেশেভাগের ইতিহাস নিয়েও তাঁর ছবি 'পার্টিশন ১৯৪৭'-এ সেরকমই একটা আভাস দিয়েছেন পরিচালক গুরিন্দর চড্ঢা।
কথায় বলে ইতিহাস তাঁরাই লেখেন যাঁরা 'জয়ী' হন। পরাজিতদের ইতিহাস কখনও সামনে আসে না। দেশেভাগের ইতিহাস নিয়েও তাঁর ছবি 'পার্টিশন ১৯৪৭'-এ সেরকমই একটা আভাস দিয়েছেন পরিচালক গুরিন্দর চড্ঢা। এ ছবির শুরু থেকে শেষ দেশভাগের রাজনীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে। ইতিহাসকে আরও একবার 'পরাজিতদের' চোখ দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন গুরিন্দর। উল্লেখ্য, ইংরাজি ও হিন্দি দুটি ভাষাতে এই ছবি মুক্তি পেয়েছে।
প্রেক্ষাপট
দেশভাগের সময় তিনটি সম্প্রদায়ের দাবিকে মাথায় রেখে গোটা বিষয়টি কার্যকর করে ইংরেজ সরকার। হিন্দু, শিখ ও মুসলিম, এই তিন সম্প্রদায়ের চাওয়া পাওয়াকে কেন্দ্র করেই এদেশে রচিত হয়েছে দেশভাগের করুণ ইতিহাস। কিন্তু সেই ইতিহাসের কতটা আমাদের সামনে আর কতটা পর্দার আড়ালে রয়েছে তা নিয়েই ছবিতে প্রশ্ন তুলেছেন পরিচালক গুরিন্দর।
কাহিনি
ছবিতে দেখানো হয়েছে দেশভাগের সেই অগ্নিগর্ভ সময়ে বাংলা পাঞ্জাব জুড়ে একের পর এক দাঙ্গা শুরু হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে ভারত ভাগ করতে দিল্লি আসেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। তবে ক্রমেই মাউন্টব্যাটেন বুঝতে শুরু করেন যে দেশভাগের এই পুরো রাজনীতিটাই 'চার্চিল সরকার 'ছক কষে সাজিয়েছে। যার সাজানো দাবার গুটি মাত্র হয়ে রয়েছেন মাউন্টব্যাটেন। এরপরই ধীরে ধীরে ছবিতে উঠে আগে দেশভাগের অজানা একটা গল্প।
অভিনয়
এই ছবিতে শেষবারের জন্য অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে অভিনেতা ওম পুরীকে। নিজের গণ্ডিতে থেকে অবশ্যই তিনি নিজের শেষ স্ক্রিন পারফরম্যান্সে একফোঁটাও জমি ছাড়েননি। তাঁর সঙ্গে সমান তালে তাল মিলিয়ে হুমা কুরেশি। ছবিতে জিতের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মণীশ দয়াল, তাঁরও সংলাপ পরিবেশন তথা চোখের ভাষা প্রমাণ করে যে অভিনেতা হিসাবে পরিণত হতে তিনি বেশি সময় নেবেন না।
পরিচালনা
ভারতে দেশাত্মবোধ বা দেশের রাজনীতি নিয়ে যেকোনও ছবির প্রতিই যে দর্শকের আকর্ষণ থাকবে , তা বলাই বাহুল্য। তবে এই ছবিত ইতিহাসকে নিয়ে নতুনভাবে গবেষণা করেছেন পরিচালক। তবে ছবির কোথাও কোথাও কাহিনির বুনোট বড্ড আলগা হয়ে গিয়েছে। যা দর্শককে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। সেক্ষেত্রে, 'বেন্ড ইট লাইক বেকহ্যাম' - ছবিতে যে দক্ষতা দেখিয়েছিলেন গুরিন্দর, তা এই ছবিত উধাও হয়ে গিয়েছে।
সঙ্গীত
ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন এ. আর. রহমান। স্বাভাবতই এছবির সঙ্গীত মনোগ্রাহী করে তুলেছেন রহমান। তবে হানস রাজ হনসের গাওয়া 'মস্ত কলন্দর' গানটি ছাড়া আর কোনও গানই সেভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।
সবশেষে
ছবিতে অনেক জায়গাতেই "ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট' বইটির কাহিনির বহু অংশকে মনে করিয়ে দিয়েছেন গুরিন্দর। তবুও ছবিতে একাধিক ফাঁকফোকড় থাকায় , সেভাবে দর্শক টানতে ব্যর্থ হয়েছে 'পার্টিশন ১৯৪৭' ।