সিনেমা রিভিউ 'হারমখোর': ছবির হৃৎপিন্ড নওয়াজই, চোখ গেলনা অন্যদিকে
উত্তর ভারতের রুক্ষ জমির প্রেক্ষাপটে , জমে ওঠা এক নিষ্পাপ সাবলীল সম্পর্ক। শিক্ষক শ্যামের ভূমিকায় নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি, আর তার ছাত্রী সন্ধ্যার ভূমিকায় রয়েছে শ্বেতা ত্রিপাঠি।
হারমখোর
অভিনয়ে-
নওয়াজউদ্দিন
সিদ্দিকি,শ্বেতা
ত্রিপাঠি
পরিচালক
-
শ্লোক
শর্মা
এক মাঝবয়সী শিক্ষক ও তার কিশোরী ছাত্রী। তাদের মধ্যে সম্পর্ক। ঠিক কেমন হতে পারে ? শুধুই কি গুরুশিষ্যের সম্পর্ক নাকি মাঝে সাঝে তার বাইরে বেরিয়েও সম্পর্ক বাঁক নিতেই পারে অন্যদিকে.. সমাজের ভয়ে অনেক গোপন ভাবনাই কি আড়াল করে চলা যায় ?এই সমস্ত প্রশ্নের এক অদ্ভুত উত্তর জমে রয়েছে শ্লোক শর্মা পরিচালিত 'হারামখোর'-এ। শিক্ষক শ্যামের ভূমিকায় নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি, আর তার ছাত্রী সন্ধ্যার ভূমিকায় রয়েছেন শ্বেতা ত্রিপাঠি।
পটভূমি
উত্তর ভারতের রুক্ষ জমির প্রেক্ষাপটে , জমে ওঠা এক নিষ্পাপ প্রেমের সাবলীল সম্পর্ক। গল্পে শ্যাম (নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি) একজন অঙ্কের শিক্ষক। দেখা গিয়েছে শ্যাম সবসময়ই ক্লাসে ছাত্রদের থেকে ছাত্রীদের বেশি গুরুত্ব দেয়। সন্ধ্যা (শ্বেতা ত্রিপাঠী) ,শ্যামের কাছে টিউশন পড়তে যায়। এখান থেকেই শুরু হয় গল্পের বীজ বোনা। বলা ভালো সম্পর্কের বীজ বোনা। এই সম্পর্ক নিয়ে স্বভাবতই একটা কৌতূহল থেকে যায় আশপাশের সব মহলে।
কিন্তু তারপর কী ? এই সম্পর্কের চড়াই উতরাই নিয়ে এগিয়ে চলে গল্প। এই সম্পর্কের শেষই বা কোথায়.. সবটা ফাঁস করে দিয়ে এথানে আর কৌতুহলের ইতি টানছি না। শেষটা জানতে হলে অবশ্য আপনাকে ছবির শুরু থেকে শেষটা দেখতে হবে।
পারফরম্যান্স
নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির স্টারডমেই তাঁর দর্শক সংখ্যা অনেক। তার ওপর এই ফিল্মের জন্য নিউ ইয়র্ক ফিল্ম ফেস্টিভালে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন। ফলে স্বভাবতই নওয়াজকে দেখবার জন্য থিয়েটারে যে একটা বড় অংশের দর্শক আসবেন সেটা বলাই বাহুল্য। আর এই ফিল্মে, ঠিক যতটা দর্শক তার থেকে আশা করেছেন ঠিক ততটাই দর্শককে ভরিয়ে দিয়েছেন তিনি । উত্তর ভারতের ভাষায় সংলাপ বলবার সময় তার সঠিক উচ্চারণ ক্ষমতা, অসামান্য ভাব ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা সব মিলিয়ে নওয়াজ এই ফিল্মের অন্যতম সম্পদ।
অন্যদিকে 'মাসান'-এর পর আবারও অন্য ধারার ফিল্মে শ্বেতা ত্রিপাঠি অনবদ্য। এছাড়াও ইরফান খানের মতো কিশোর অভিনেতারাও নিজের নিজের জায়গায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
খামতি
পরিচালক শ্লোক শর্মার এই প্রথম ছবিতে বেশ কয়েকটি জায়াগায় অনঅভিজ্ঞতা প্রকাশ পেয়েছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রেই সংলাপ খুব একটা স্পষ্ট নয়। সম্পাদনার ক্ষেত্রেও আরো একটু সতর্কতার প্রয়োজন ছিল।
সবশেষে, জসনিল কৌর রোয়ালের সঙ্গীত নির্দেশনার সঙ্গে ফিল্মের গল্প-ভাবনার আসামান্য সংযোগে এই ফিল্ম সব ধরনের দর্শককেই যে মুগ্ধ করবে তা বলাই বাহুল্য। অন্য ধারার কাহিনী বিন্যাস নিয়ে তৈরি এই ফিল্মে অভিনেতাদের অভিনয় দক্ষতাই যদিও শেষ কথা বলেছে।