'বাঞ্ছা এলো ফিরে ' সিনেমা রিভিউ : নস্টালজিয়ায় মুড়ে বাঞ্ছা দেদার বিনোদন জুগিয়েছে!
বাঞ্ছা বলতে আপামর বাঙালির মনে মনোজ মিত্র গেঁথে রয়েছেন। সেই চরিত্রে এবার অভিনয় করেছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। মনোজ মিত্রর রেশ ভাঙতে না পারলেও অভিনয়ে কোনও খামতি রাখেননি প্রদীপ ভট্টাচার্য। মোটের উপর ভালই।
প্রথমেই বলে রাখা ভাল, 'বাঞ্ছা এল ফিরে' ছবিকে তপন সিংহ পরিচালিত মনোজ মিত্র অভিনীত 'বাঞ্ছারানের বাগান'-এর সিকোয়েল ভাবছেন যারা তাদের বলি ভুল ধারণাকে মনের মধ্যে জায়গা দেবেন না। এই বাঞ্ছা তপন সিংহের নয়, অমিতাভ পাঠকের বাঞ্ছা। একেবারে নতুন রূপে, নতুন সমস্যায় জর্জরিত।
এই ছবি মুক্তির আগে অনেকেই বলেছিলেন, সেই শরীরী-অশরীরী থিম তুলে আনার কারণে কোথায় যেন সুপারহিট ভূতের ভবিষ্যতের সঙ্গে ক্ল্যাশ হচ্ছে এই ছবির সাতন্ত্র। কিন্তু বিশ্বাস করুন ছবিটি দেখলেই বুঝবেন এই দুই ছবির মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। এই ছবি একেবারে নিখাঁদ মনোরঞ্জনের রসদ।
পুরনো বাঞ্ছারামের গল্পের সিকোয়েল না হলেও এই দুই বাঞ্ছারই পটভূমিতে বেশ মিল রয়েছে। কেউ তার বাগান হাতিয়ে নেবে এই ছিল বাঞ্ছারামের ভয়। আর ছবির চিত্রনাট্য সমসাময়িক করতে এখানে জমিদারের বদলে প্রোমোটাররাজকে তুলে ধরেছেন পরিচালক।
এই ছবির গল্প অনুযায়ী, বাঞ্ছার বাগানের গা ঘেঁষে জাতীয় সড়ক তৈরির প্রস্তাবনা হয়েছে। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বাঞ্ছার বাগানের দাম নিমেষের মধ্যে চড়চড়িয়ে বেড়ে উঠেছে। কিন্তু সেসব কি আর বাঞ্ছা বোঝে? বাঞ্ছার প্রাণ তো আটকে তাঁর বাগানেই।
এদিকে তার নাতি জমিটা বিক্রি করে দেওয়ার জন্য দাদুকে বারবার রাজি করানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। দাদু-নাতির ঝগড়া চলতেই থাকে। নাতির সঙ্গে তর্কাতর্কির জেরে প্রাণ যায় বাঞ্ছার। এখানেই আবির্ভাব অশরীরী নানা কাণ্ডকারখানার। বাঞ্ছার বাগানের শেষ পরিণতি কী হয় তা জানতে থিয়েটারেই যেতে হবে।
বাঞ্ছা বলতে আপামর বাঙালির মনে মনোজ মিত্র গেঁথে রয়েছেন। সেই চরিত্রে এবার অভিনয় করেছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। মনোজ মিত্রর রেশ ভাঙতে না পারলেও অভিনয়ে কোনও খামতি রাখেননি থিয়েটারের এই প্রবীন অভিনেতা। বাঞ্ছার ভূমিকায় মানিয়েছেও বেশ।
অন্যদিকে, প্রোমোটারের ভূমিকায় মাতিয়েছেন রজতাভও। যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন মাধবী মুখোপাধ্যায়, দীপঙ্কর দে, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়, পল্লবী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। তবে জুন মালিয়াকে এই ছবিতে একটু কম ব্যবহার করা হলেই হয়তো ভাল হত। কিছু কিছু জায়গায় বেশ বিরক্তিকর লেগেছে জুনের অনস্ক্রিন অ্যাপিয়ারেন্স।