ভাইজানের 'টিউবলাইট'-এর আলোর জোর কম ঠেকল দর্শকের কাছে!
-ঈদ মানে সলমান খান, দিওয়ালি মানে শাহরুখ খান, আর খ্রিস্টমাস মানে আমির খান! বলিউডে মরশুম ভিত্তিক এই 'খান ফর্মুলা'তেই সারা বছর মজে থাকেন দর্শকরা। সেই খান ফর্মুলা মেনেই মুক্তি পেল সলমানের 'টিউবলাইট'।
অভিনয়:
সলমন
খান,
ওম
পুরী,
জুজু,
সোহেল
খান,মাটিন
রে
তেঙ্গু,
পরিচালক:
কবীর
খান
প্রযোজক:
সলমন
খান
ঈদ মানে সলমান খান, দিওয়ালি মানে শাহরুখ খান, আর খ্রিস্টমাস মানে আমির খান! বলিউডে মরশুম ভিত্তিক এই 'খান ফর্মুলা'তেই সারা বছর মজে থাকেন দর্শকরা। সাম্প্রতিককালে বলিউডের ঈদ উদযাপন মানেই সলমানের ছবি। ভাইজানের ফ্যানকূল গোটা বছর অপেক্ষা করে থাকে ঈদের মরশুমে তাঁদের 'গুরু'র ছবি দেখার জন্য। আর প্রতি বছরেই বক্স অফিসে তাঁর ছবির সাফল্যে মাত হন সলমনের ভক্তকূল থেকে প্রযোজকরা।
এবছরেও সেই খান ফর্মুলা মেনেই মুক্তি পেল সলমানের ঈদ ব্লকবাস্টার ' টিউবলাইট'। ছবির ফার্স্ট লুক রিলিজ থেকেই ছিব ঘিরে 'ভাইজান' ভক্তদের উন্মাদনা কিছু কম ছিল না। আর রিলিজের প্রথম দিনে যে কোনও সলমন ভক্তই ' ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো ' দেখা থেকে নিজেকে রুখতে পারবেন না , তা সবারই জানা। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হলে দিনের প্রথম থেকেই উপচে পড়ছে সলমন ভক্তদের ভিড়।
কাহিনি বিন্যাস
ছবিতে মুখ্য চরিত্র লক্ষ্মণ কুমার বিস্টকে(সলমন খান) কসকলে 'টিউবলাইট' বলে ডাকে। তার একটাই কারণ, বয়সের তুলনায় লক্ষ্মণ পরিণত নয় , মানসিক দিক থেকে। লক্ষ্মণের ভাই ভরত(সোহেল খান), লক্ষ্মণকে প্রাণের চেয়েো বেশি ভালোবাসে। ছোটবেলায় বাবা মা মারা যাওয়ার পর থেকে লক্ষ্মণের একমাত্র আশ্রয় তাঁর ভাই। এমনিতে দুই ভাইয়ের জীবন হেসে খেলে কাটছিল। কিন্তু হঠাৎই ভরত চাকরি পায় ভারতীয় সেনায়। ফলে লক্ষ্মণকে ছেড়ে তাঁকে চলে যেতে হয় ভারত-চিন সীমান্তে। এরপর কাহিনী নানা দিকে মোড় নেয়। লক্ষ্মণের জীবনে আসে আরও দুই চরিত্র লে লিং( জুজু) ও তাঁর ছেলে গুয়ান(মাটিন রে তেঙ্গু)। তারপর থেকেই কাহিনি মোচড় দেয় অন্যদিকে।
পরিচালনা
২০১৫
সালের
ঈদে
কবীর-সলমন
জুটি
দর্শককে
উপহার
দেয়
'বজরঙ্গী
ভাইজান'।
তারপর
২০১৭
সালে
'টিউবলাইট'
।
তার
আগে
এই
জুটিইর
হাত
ধরেই
সলমন
ভক্তরা
পেয়েছে
'
এক
থা
টাইগার'
ছবি।
পরিচালক
কবীর
খানের
সঙ্গে
সলমন
খানের
রসায়ন
প্রতিবারই
দর্শককে
মাত
করে।
এবারেও
পরিচালককে
বক্স
অফিসে
সলমনের
এই
ছবি
ঢেলে
দেবে
বলে
মনে
করা
হচ্ছে।
উল্লেখ্য,
'টিউব
লাইট'-এর
সঙ্গে
মিল
রয়েছে
'বজরঙ্গী
ভাইজানের'।
তবে
বজরঙ্গী
ভাইজান
যেভাবে
দর্শকরে
মন
ছুঁয়েছিল
সেভাবে
'টিউবলাইট'
পারেনি।
এবিষয়ে
কয়েকটি
ক্ষেত্রে
একটু
পিছিয়ে
পড়েছে
কবীর
খানের
পরিচালনা।
ফলে
কবীরের
পরিচালনায়
'বজরঙ্গী
ভাইজান'-এর
থেকে
পিছিয়ে
গেল
'টিউবলাইট'।
যদিও
ছবি
দর্শকদের
মনোগ্রাহী
করার
সমস্ত
রকমের
মশলাই
কবীর
জোগাড়
করেছিলন,
তবুও
তার
সঠিক
মিশেল
হয়নি।
অভিনয়
বলিউডের অন্যতম দক্ষ অভিনেতা প্রয়াত ওম পুরীকে এই ছবিতে দেখা গিয়েছে। তাঁর চরিত্র জুড়ে তিনি তাঁর সেরাটা উজার করে দিয়েছেন। যেমনটা প্রতি ফিল্মে তিনি করে থাকেন। তাঁর অভিনয় এই ছবির একটা 'পাওনা'! অন্যদিকে ছোট মাটিন রে তেঙ্গু, দর্শকদের মন জিতে নেওয়ার জন্য এছবির প্রথম শর্ত। প্রতিটি শটে তার অভিব্যক্তি , আচরণ ছিল উপযুক্ত। মাটিন নিজের অভিনয়ে, এত কম বয়সেই ছাপিয়ে গেছে অনেককে। সলমন খানে নিজের গন্ডির মধ্যে থেকে যেভাবে অভিনয় করেন সেররকমই ছইলেন সাবলীল। তবে তাঁর ভাই সোহেল খানকে এছবিতে অভিনয়ের ক্ষেত্রে খুবই অপরিণত লেগেছে। বলিউডে প্রথমবার পা রেখে মন জিতে নিয়েছেন চাইনিজ অভিনেত্রী জুজু।
সলমন ফ্যাক্টর
সলমনের অন্যান্য হিট ছবিতে যেভাবে তাঁকে জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে পেশ করেন পরিচালকরা, এছবি সেদিক থেকে ভিন্ন। সাদামাটা এক ব্যক্তিত্বের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সলমন। ফলে তাঁর সুঠাম 'বডি' দেখানোর সরকম সুয়োগ এখানে পাননি বলিউডের সুলতান। যা বহু ফিল্মে করে থাকেন তিনি। তবে সলমনারে সেই জাঁকজমকপূর্ণ ইমেজকে ঝেড়ে ফেলে , একজন এক্কেবারে সাধারণ নাগরিকের ভূমিকায় অভিনয় করাটা নেহাতই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে অনেক চলচ্চিত্র সমালোচকের মতে সেই পরীক্ষায় 'ডিস্টিংশন' নিয়ে পাস করতে পারেননি সল্লু মিঞা ! তাতে কী !এছবির ইউএসপি প্রথম থেকেই সলমন, এছবিতে দর্শককে হলমুখী করার জন্যও সলমনই একমাত্র ঘুটি পরিচালকের কাছে।
প্রযুক্তিগত দিক
অসিম মার্চেন্টের লেন্সে দেশের চিন সীমান্তের নানা দৃষ্টি আক্রষণ দৃশ্য ধরা পড়েছে। ছবিতে যে সমস্ত লোকেশন দেখা গিয়েছে ,তাতে উপযুক্ত সিনেম্যাটোগ্রাফির কাজ করা হয়েছে।
সঙ্গীত
ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন প্রীতম চক্রবর্তী। তবে সেভাবে জমাটি কোনও ট্র্যাকই এছবিতে পাওা যায়নি। এরই মধ্যে 'রেডিও' গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।
শেষকথা
সলমনের অভিনয় যেমনই হোক, সোহেল খান দর্শকদের যতই নিরাশ করুন, এই ছবি ২০১৭ সালের ঈদের মরশুমে বক্স অফিস যে একচ্ছত্রভাবে মাত করবে তা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আপাতত এই ছবির ব্যাবসায়িক পরিসংখ্যানের দিকে নজর সব মহলের।