ব্যোমকেশ পর্ব মুভি রিভিউ : 'সত্যাণ্বেষী' আবির আরও স্মার্ট আরও ঝকঝকে, প্রেমে না পড়ে থাকা যায় না
একদিকে ফেলুদা অন্যদিকে ব্যোমকেশ। বাঙালির সেরা দুই নস্টালজিয়া এই শীতের মরশুমে প্রতিযোগী এবারের বড়দিন একেবারে জমে ক্ষীর। মুক্তি পেল অরিন্দম শীলে ব্যোমকেশ পর্ব।
একদিকে
ফেলুদা
অন্যদিকে
ব্যোমকেশ।
বাঙালির
সেরা
দুই
নস্টালজিয়া
এই
শীতের
মরশুমে
প্রতিযোগী
এবারের
বড়দিন
একেবারে
জমে
ক্ষীর।
মুক্তি
পেল
অরিন্দম
শীলে
ব্যোমকেশ
পর্ব।
এই ব্যোমকেশ আরও বেশি পারফেক্ট। আরও বেশি সচেতন, আরও বেশি স্বতঃস্ফূর্ত। না হয়তো একটু ভুল বলা হয়ে গেল। ব্যোমকেশ না ব্যোমকেশের চরিত্রে অভিনয় করা আবির চট্টোপাধ্যায়ের জন্যই ছিল বিশেষণগুলো।[ডবল ফেলুদা সিনেমা রিভিউ : এ ফেলুদা তো 'সিনিয়র সিটিজেন', তবু হজম করতে কষ্ট হল না]
সত্যি এছবি দেখার পর আবিরে মুগ্ধ না হয়ে সত্য়িই পারা যায় না। ব্যোমকেশের চরিত্রে এই প্রথম অভিনয় করছেন না আবির। তবে ব্যোমকেশ পর্বের আবির যেন আরও স্মার্ট।
এছবির পটভূমি ১৯৪৮ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরই। আমেরিকান সৈন্যরা চলে যাওয়ার সময় তাদের কিছু অস্ত্রসস্ত্র স্থানীয় কিছু মানুষের কাছে বেচে দিয়ে যায়। সেই অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও পাওয়া যায়নি অস্ত্রের খোঁজ।
তাই সরকারের হয়ে অস্ত্র খুঁজে দেওয়ার দায়িত্ব পড়ে ব্য়োমকেশ বক্সির উপরই। কালো ঘোড়া, জঙ্গল, গ্রামের ছেলে অমৃতর খুন, অস্ত্র লেনদেন এই ছোট ছোট হিন্টগুলি নিয়েই এগিয়ে চলে ব্যোমকেশের তদন্ত। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অমৃতের মৃত্যু গল্প অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবিটি।
এই ছবি ১৯৪৮ সালের পটভূমিকায়। ডুয়ার্সের অনবদ্য লোকেশনে শুটিং করা হয়েছে। ছবির গল্পের সঙ্গে লোকেশন বাছাইয়ে কোনও খামতি রাখেননি পরিচালক। তাই আলাদা পয়েন্ট না দিয়ে পারছি না। ক্যামেরার কাজ নিখুঁত।
এই ছবিতে ডবল লেয়ার কালার তৈরি করা হয়েছে যা আপাতভাবে দেখলে সেভাবে বোঝা যাবে না, তবে এর কারণে দৃশ্যগুলি আরও রিয়্য়ালিস্টিক লেগেছে।
তবে এই ছবির কথা বলতে গেলে আলাদা করে বলতে হয় ছবির অ্যাকশন দৃশ্যের কথা। বাংলা ছবিতে এই ধরণের অ্যাকশন দৃশ্য খুব কমই হয়। আবিরের জলদগম্ভীর চেহারায় এই অ্যাকশন সিকোয়েন্সগুলো দারুণ মানিয়েছে। আবির দারুণভাবে প্রতিটি দৃশ্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন। অভিনেতা হিসাবে এই ছবিতে অনেক বেশি ম্যাচিওর লেগেছে আবিরকে। নিজের ডায়লগ থ্রোয়িংয়ে যে খুব মনোযোগ দিয়েছেন আবির তা বেশ ভালই বোঝা গিয়েছে।
ব্যোমকেশের পাশে অজিত ও সত্যবতীর ভূমিকায় ঋত্বিক ও সোহিনী প্রত্যাশিত অভিনয়ই করেছেন। রুদ্রনীল ঘোষ, রজতাভ দত্ত, শুভাশিষ মুখোপাধ্যায় ভাল অভিনয় করেছেন। কৌশিক সেনের অভিনয়ে একটা দাপট থাকলেও কোথাও কোথাও বেশ হাল্কা লেগেছে। তবে মোটের উপর খারাপ বলা যায় না।
তবে, সবশেষে সরোজ খানের কোরিওগ্রাফিতে দিল রাসিয়া রে গানটিতে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাচ কিন্তু আলাদা গ্ল্যামার যোগ করেছে। এই প্রথমবার কোনও বাংলা ছবিতে কোরিওগ্রাফি করলেন সরোজ খান। গানটিও চমৎকার গেয়েছেন উজ্জয়িনী।
তবে সায়ন্তিকা হা আবির নয় এই ছবির আসল এক্স ফ্যাক্টর কিন্তু পরিচালক অরিন্দম শীলই।