(রিভিউ) শচীন :অা বিলিয়ন ড্রিমস - তিনি স্ক্রিনে এলেন আর মন জয় করে নিলেন!
ক্রিকেট জীবনে যে মুকুটের তিনি মালিক, তা খুব সহজে আসেনি বরং তা 'অর্জন' করেছেন শচীন। সেই 'অর্জন' করে নেওয়ার গল্পই এই ছবিতে দেখানো হয়েছে।
ভারতীয় সংস্কৃতিতে ক্রিকেট যদি ধর্ম হয়, তাহলে তার ভগবান যে তিনিই হবেন, তা বলাই বাহুল্য। ক্রিকেট জীবনে যে মুকুটের তিনি মালিক, তা খুব সহজে আসেনি বরং তা 'অর্জন' করেছেন তিনি। নিজের পারফরম্যান্স, খেলার প্রতি সাধনায় তিনি হয়ে উঠেছেন একটা বিশাল জনজাতির 'আদর্শ'। তিনি শচীন তেন্ডুলকার। আর তাঁকে নিয়েই ছবি শচীন :অা বিলিয়ন ড্রিমস'।
ভারতীয় ক্রিকেটের ড্রেসিং রুমেও তাঁর জনপ্রিয়তা কম নেই। বহুবার বহু জুনিয়ার ক্রিকেটারের খারাপ সময়ে কাঁধে হাত রেখেছেন দলের 'সিনিয়র' শচীন। আবার তেমনই ভালো পারফরম্যান্সের পর পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন জুনিয়ারদের। বিরাট, যুবরাজ,শেহবাগের বহু সাক্ষাৎকারেই , দলের 'সিনিয়র ক্রিকেটার' শচীন তেন্ডুলকারের উদ্বুদ্ধ করার বহু গল্পই উঠে এসেছে বার বার। ক্রিকেটের বাইরে মানুষ শচীন, কিংবা ঘরোয়া শচীনকে আমরা সেভাবে চিনিনা। আর সেই শচীনকেই চেনালেন পরিচালক জেমস আরস্কিন, ছবি 'শচীন :অা বিলিয়ন ড্রিমস' -এ।
পটভূমি
এই ছবিকে সচিনের বায়োপিক বলা হবে , নাকি তথ্যচিত্র, তা ঠিক করে নেবে দর্শক। তবে ছবির ব্যকরণ সরিয়ে যদি 'শচীন :অ্যা বিলিয়ন ড্রিমস' -র গল্পের দিকে নজর রাখা যায় , তাহলে এ ছবি আপনার মন ভরাতে বাধ্য। আপনি শচীনের ফ্যান হোন বা না হোন। এই ছবির গল্প মানুষ শচীনকে নিয়ে। তাঁর ওঠাপড়া, লড়াই সবকিছু মিলিয়ে সাদা-কালো থেকে রঙিন হয়ে ওঠার গল্প।
ছবির গল্প
ছবিতে শচীন নিজে নেপথ্যকণ্ঠে জানিয়েছেন, তিনি চিরকারলই 'ক্রিকেটার' শচীনের থেকে 'মানুষ' শচীন হয়ে ওঠাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আর এই শিক্ষা তিনি পেয়েছেন তাঁর বাবার থেকে। ছবির শুরুতেই দেখানো হয় ছোট্ট শচীনকে। যে কী না ভীষণ দুষ্টু। কারোর গাড়ির টায়ার পাংচার করে তো কোনও ব্নধুর সঙ্গে ইয়ার্কি মারতে কোনও কসরৎ ছাড়েনা। তবে এই শচীনই ছোট থেকে ক্রিকেট নিয়ে যাবতীয় বিষয়ে খুব 'সিরিয়াস' ছিলেন। কোচ রমাকান্ত আচরেকরের যোগ্য শিষ্য হওয়ার লড়াইটা মোটাও সহজ ছিলনা।
শুধু বেড়ে ওঠা নয়। সাফল্য, খ্যাতি পেয়েও নিজের ক্রিকেটের প্রতি একইরকমের অধ্যাবসায় ধরে রাখাটাও শচীনের 'শচীন' হয়ে ওঠার একটা বড় দিক । তারপর ক্রিকেটার শচীনের পাশপাশি ১০০ কোটি ভারতীয়র 'শচীন' হওয়ার পাশাপাশি , স্ত্রী অঞ্জলির 'শচীন' হওয়ার রাস্তাটাও নেহাত সহজ ছিলনা। বাবা হিসাবেও শচীন তাঁর ছেলে মেয়েদের কতটা কাছের তা জানতে হলে দেখতেই হবে এই ছবি।
পরিচালনা
'শচীন
:অ্যা
বিলিয়ন
ড্রিমস
'
একটি
ডকু-ড্রামা।
পরিচালক
জেমস
আরস্কিন
এই
ছবিটিকে
নিজের
মতো
করে
সাজিয়
গুছিয়ে
মানুষের
কাছে
তুলে
ধরেছেন।
তাঁর
পরিচালনা
কোন
ঘরানায়
পরে,
তা
তিনি
এই
ছবিতেই
বুঝিয়ে
দিয়েছেন
।
ক্রিকেটের
স্পিরিটকে
তুলে
ধরার
পাসপাশি,
একশো
কোটি
ভারতীয়র
অনুভূতিকেও
চূড়ান্তভাবে
ফুটিয়ে
তুলেছেন
আরস্কিন
।
প্রযুক্তিগত দিক
বাইশ গজ থেকে ব্যক্তিগতজীবনের খতিয়ান। স্টেডিয়ামের ভিডৃ থেকে ইন্ডোরের শ্যুটিং। সমস্ত দিক থেকেই এই ছবির তৈরির ব্যকরণ অনন্য। প্রযুক্তিগত দিক থেকে সম্পাদনার ক্ষেত্রে বেশ সন্তোষজনক এই ছবি।
সঙ্গীত পরিচালনা
ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন এ আর রহমান। ফলে আর নতুন করে বলে দিতে হবে না, যে ছবির সঙ্গীত মানুষের মনকে কতটা ছুঁয়েছে। ছবি যেভাবে এগিয়েছে, রহমানের সুরের মুর্ছনায় আবেগঘন হয়েছে দর্শক।
সবশেষে
মুম্বইয়ের শিবাজী পার্কে খেলা থেকে ডন ব্র্যাডম্যানের পাশে দাঁড়ানো, ওয়ার্ল্ডকাপ জেতা সব মিলিয়ে এই ছবি আবারও একবার নতুন করে শচীনের 'ভক্ত' করে তুলেছে দর্শককে। আর ছবির এই ক্যারিশ্মা কে সঙ্গে নিয়েই আরও একবার হলমুখী হবেন , ছবির 'ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো' এর দর্শকরা।