জনপ্রিয় এই বাংলা ছবিগুলি উস্কে দেয় বন্ধুত্বের ফেলে আসা নানা স্মৃতিকে
জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বন্ধুত্বের মানে পাল্টাতে থাকে। বন্ধুত্বকে নতুনভাবে আবিষ্কার করা যায় এক একটা বিশেষ সময়ে।
'বন্ধুত্ব' নামের 'আবেগ'টিকে কোনও একটি বিশেষ দিনেই উদযাপনের জন্য বেঁধে রাখা যায়না। বন্ধুত্ব চিরন্তন। বন্ধুর ভুল ধরা, ভুল করা থেকে বন্ধুকে আটকানো, শত ঝগড়ার পরও ছল-ছল চোখে বন্ধুকে চেপ্পে জড়িয়ে ধরা দৃশ্যগুলো প্রত্যেকের জীবনেই আসে। আর সেগুলোই বন্ধুত্বের কোনও না কোনও বিশেষ গল্প তৈরি করে। স্মরণীয় হয়ে থাকে সেই সমব গল্প। কখনও স্কুল, কলেজ, চাকরি বা কখনও কোনও আচমকা সময়ে আলাপ হয়ে যাওয়া মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব সারাটা জীবন ধরে নিজের কাছে আঁকড়ে রাখতে পারে একটা মানুষকে। যে বন্ধুত্বের কাছে 'ইগো' ভুলে সমস্ত সুখ, দুঃখ, ব্যর্থতা ভাগ করে নিতে কুণ্ঠা বোধ করেন না কেউই।
[আরও পড়ুন:শাহরুখ থেকে করিনা, বলিউডে কোন তারকা কার 'বেস্টফ্রেন্ড' দেখে নিন ]
জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বন্ধুত্বের মানে পাল্টাতে থাকে। বন্ধুত্বকে নতুনভাবে আবিষ্কার করা যায় এক একটা বিশেষ সময়ে। আর বন্ধুত্ব নামের এই অদ্ভুত মানবিক সম্পর্ককে বহু বাংলা ছবিতেই তুলে ধরা হয়েছে নানা গল্পের বুনোটে। দেখে নেওয়া যাক, সেই সমস্ত বাংলা ছবি, যা উস্কে দেয় ফেলে আসা দিনের বন্ধুত্বের নানা স্মৃতিকে।
চারমূর্তি
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়য়ের সৃষ্ট চরিত্র 'টেনিদা' কে নিয়ে তৈরি ছবি 'চারমূর্তি'। উমানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত এই ছবির মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিন্ময় রায়। পটলডাঙা নামের এক জায়গার টেনিদা বছর বছর 'ফেল' করে তাঁর থেকে ছোট বয়সীদের সঙ্গে একই ক্লাসে পড়েন। এই টেনিদা আর তার সঙ্গীদের এক অ্যাডভেঞ্চারের গল্পই রয়েছে 'চারমূর্তি' ছবিতে। হাসির মোড়কে বন্ধুত্বের এক মূল্যবান বার্তা দেওয়া হয়েছে এই গল্পে। ফ্রেন্ডশিপ ডে-তে একা একা একঘেয়ে লাগলে,একবার দেখে নিতে পারেন বাংলা সিনেমার এই অনবদ্য ছবিটি।
চলো লেটস গো
অঞ্জন দত্ত পরিচালিত এই ছবি হরি, অসীম শেখর, সঞ্জয়কে নিয়ে। এই চরিত্রগুলোকে শেষবার বাঙালি দেখেছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ও সত্যজিত রায় পরিচালিত ছবি 'অরণ্যের দিনরাত্রি'-তে। বহু বছর পর সেই চরিত্রগুলির নামে নামাঙ্কিত এই ৪ যুবকের জীবনের ওঠানামা, পছন্দ , আকাঙ্খা আর হাতে পাওয়া বাস্তবের এক অনবদ্য গল্প 'চলো লেটস গো'। আর ৪ যুবকের জীবনের এই নানা দিক গিয়ে মিশেছে তাঁদের বন্ধুত্বে, যা না থাকলে তাঁদের কাছে তাঁদের জীবন বোঝটাই বৃথা। হাস্যরসাত্মক এই গল্পে একটা কঠিন বাস্তব তুলে ধেরেছেন পরিচালক। ছবিতে রুদ্রনীল, পরমব্রত, শ্বাসত, ঋত্বিকের মতো দক্ষ অভিনেতার অভিনয় ছবির অন্যতম ইউএসপি।
অরণ্যের দিনরাত্রি
হরি, অসীম শেখর, সঞ্জয়, এই চার মূল চরিত্র সত্যজিত রায় পরিচালিত ছবি 'অরণ্যের দিনরাত্রি'-র। ১৯৭০ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবি আজও বাঙালির কাছে প্রাসঙ্গিক। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা উপন্যাসের ওপর আধারিত এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর, শমিত ভঞ্জ, রবি ঘোষ, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়। বন্ধুত্বকে নতুন করে আবিষ্কার করার গল্প বুনেছে এই গোটা ছবিটি। মানবিক চাওয়া পাওয়ার সঙ্গে কীভাবে প্রতিটি মানুষের জীবনে বন্ধুত্বের আশ্রয় জরুরি , তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হয়েছে 'অরণ্যের দিনরাত্রি'-তে।
ওপেন টি বায়োস্কোপ
'চন্দ্রবিন্দু' খ্যাত গায়ক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের ছবি 'ওপেন টি বায়োস্কোপ'। ৯০ এর দশকে বাঙালি ছেলে মেয়েদের 'ছোটবেলা' কীভাবে কেটেছে, তার একটা অসামান্য দলিল এই ছবি। বন্ধুত্বের কাছে প্রতিটি মানুষের কিছু 'না বলা' দাবি থাকে, সেই দাবিকে ঘিরেই ছবির গল্প। বাঙালির কৈশরের প্রেম, বন্ধুত্ব আর তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নানা দিক নিয়ে ছবির কাহিনি বিন্যাস। ছবিতে, ফোয়ার,কোচুয়া ,টুকাই চরণ দের চরিত্র যেন এক্কেবারে 'পাশের বাড়ির ছেলে'! যাদের রোজ পাড়ায় খেলেত ঝগড়া করতে, মারপিট করতে দেখা যায়, আবার পরক্ষণেই তারা এক অপরকে বলতে পারে ' খেলব আজ ওই ঘাসে, তোর টিমে, তোর পাশে... বন্ধু চল'।