For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

সত্যি কি মিথ্যা ফাঁসির কাঠে ঝুলেছিল ধনঞ্জয়, চাঞ্চল্যকর তথ্য বদলে দিতে পারে ধারনা

ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি হয়ে গিয়েছে একযুগেরও বেশি সময় আগে। ১১ অগাস্ট তাঁকে নিয়ে সিনেমাও মুক্তি পেতে চলেছে। কিন্তু কী ঘটেছিল ধনঞ্জয়ের ক্ষেত্রে, আদৌ কি সুবিচার পেয়েছিলেন তিনি?

  • |
Google Oneindia Bengali News

ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি হয়ে গিয়েছে একযুগেরও বেশি সময় আগে। ১১ অগাস্ট তাঁকে নিয়ে সিনেমাও মুক্তি পেতে চলেছে। কিন্তু কী ঘটেছিল ধনঞ্জয়ের ক্ষেত্রে, আদৌ কি সুবিচার পেয়েছিলেন তিনি?

হেতাল পারেখের খুনের পর থেকে ১৪ বছরেরও বেশি সময় কারাবাস ভোগ করেন ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। তারপর ফাঁসি। এই নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। একজন অপরাধীকে শিক্ষা দিতে ফাঁসি কতটা যুক্তিযুক্ত বিধান? এই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়েছে। কিন্তু, আটকানো যায়নি ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির কাঠে ঝোলাটাকে।

এমনকী, হেতল পারেখ হত্যাকাণ্ডকে 'রেয়ার অফ দ্য রেয়ারেস্ট' বলেও অ্যাখায়িত করেছিল আদালত। কারণ, আদালতে প্রমাণিত হয়েছিল ধনঞ্জয় প্রথমে ১৪ বছরের হেতেল কে হত্যা করে তারপর তার শবের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।

ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির পর কেটে গিয়েছে এক দশকেরও বেশি সময়। কিন্তু, বাঙালি সমাজ জীবনে ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে ফিরে এসেছেন ধনঞ্জয়। কারণ, সমাজকর্মী পরমেশ গোস্বামী, দুই অধ্যাপক দেবাশিস সেনগুপ্ত এবং প্রবাল চৌধুরী। এই ত্রয়ী তাঁদের 'আদালত মিডিয়া সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি' গ্রন্থে তুলে ধরেছেন কীভাবে কোথায় কোথায় ফাঁক থেকে গিয়েছিল ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির ঘটনায়। দেবাশিস সেনগুপ্তদের এই প্রয়াস উদ্বুদ্ধ করেছে বাংলা চলচ্চিত্র জগতকেও। তাই তৈরি হয়েছে 'ধনঞ্জয়' নামে সিনেমা। ১১ অগাস্ট মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। তার আগে দেবাশিস, পরমেশ এবং প্রবালদের অনুসন্ধানের পথে একবার দেখে নেওয়া যায় ধনঞ্জয়ের ফাঁসি এক পরিকল্পিত চক্রান্ত না সত্যিকারের একটি ঘটনা?

সত্যি কি মিথ্যা ফাঁসির কাঠে ঝুলেছিল ধনঞ্জয়, চাঞ্চল্যকর তথ্য বদলে দিতে পারে ধারনা

যে ঘটনাগুলো ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে যায় সেগুলো হল( সূত্র- 'আদালত মিডিয়া সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি')

১) খুনের কাছাকাছি সময়ে ধনঞ্জয়কে হেতল পারেখদের ফ্ল্যাটের আশপাশে দেখা গিয়েছে
২) খুনের পর সে নিরুদ্দেশ হয়েছিল
৩) এই দুই ব্যাপারে ধনঞ্জয় আদালতে সত্যি কথা বলেনি।

সত্যি কি মিথ্যা ফাঁসির কাঠে ঝুলেছিল ধনঞ্জয়, চাঞ্চল্যকর তথ্য বদলে দিতে পারে ধারনা

যে ব্যাপারগুলো হেতালের মা ও পারেখ পরিবারের বিরুদ্ধে যায়, সেগুলো একবার দেখে নেওয়া যাক ( সূত্র- 'আদালত মিডিয়া সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি')

১) হেতল খুন হয়েছিল ফ্ল্যাটের মধ্য়ে। দুপুরের পর খুনের সম্ভাব্য সময়ে সেখানে হেতালের মা ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিল বলে প্রমাণ নেই। এই যুক্তিতে হেতলের মা-কেই মূল সন্দেহভাজন বলে ধরতে হবে।

২) ধনঞ্জয়কে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, শুধুমাত্র ফ্ল্যাটের ভিতরে তার উপস্থিতির তথ্য ছিল মিথ্যা সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর দাঁড়িয়ে।
৩) বাড়ির লোক ছাড়া কারও পক্ষে অল্প সময়ের মধ্যে ওই কাণ্ড ঘটিয়ে চোখে না-পড়ার মতো চেহারা নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া কঠিন।
৪) হেতলের পোস্টমর্টেম আর ফরেনসিক রিপোর্ট ইঙ্গিত দেয়, মৃত্যুর আগে তার যৌন মিলনের ঘটনায় জবরদস্তি ছিল না। সেক্ষেত্রে ধর্ষণের জন্য খুনের প্রসঙ্গ ওঠে না। বরং স্বেচ্ছায় যৌন মিলনের কথা প্রকাশ হয়ে পড়ায় বাড়ির লোকের বিদ্বেষ এবং প্রতিহিংসার ইচ্ছা জন্মে থাকতে পারে।
৫) মৃতদেহ সকলের সামনে "আবিষ্কার" হওয়ার আগে ফ্ল্যাটের সদর দরজা ভাঙার জন্য হেতলের মা বড্ড তাড়াহুড়ো করেছিলেন। যেন তিনি জানতেন দরজার ওপারে জীবিত কেউ নেই। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা আর ইন্টারকম কিংবা টেলিফোনে মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা তিনি করেননি।
৬) মৃতদেহ দেখেই হেতলের মা একা হাতে পাঁজাকোলা করে সেই দেহ তুলে নিয়ে হাসপাতালে যাবেন বলে লিফটে ওঠেন। একতলায় পৌঁছেও তিনি লিফটের মধ্যে একঘণ্টা ঠায় বসেছিলেন কী কারণে। সদ্য যে মারা গিয়েছে তার দেহ নিয়েও এই আচরণ স্বাভাবিক নয়।
৭) হেতলের খুন 'আবিষ্কার' হওয়ার পর পুলিশ ডাকতে তিন ঘণ্টারও বেশি দেরি করে পারেখ পরিবার। তার আগে মৃতদেহ বহুবার টানাহ্যাঁচড়া আর খুনের জায়গা দিয়ে বহু লোক চলাফেরা করেছে।
৮) পুলিশ আসার পর হেতলের মাকে কিছুটা আড়াল করা হয়েছিল, যদিও খাতায় কলমে খুনের অভিযোগকারিণী তিনিই। খুনের দিন সাতেকের মধ্যে হেতালের মাকে মুম্বই পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
৯) হেতলের মা ৪ বার অসুস্থতার অজুহাতে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া এড়ান। তার মধ্য়ে দুবার তিনি আদালতে হাজির থেকেও সাক্ষ্য দেননি।
১০) ধনঞ্জয়ের বাড়ি থেকে যে হাত ঘড়ি আদতে উদ্ধার হয়নি, তেমন একটা সাজানো ঘড়ি হেতালের মা লালবাজারে গিয়ে সনাক্ত করে আসেন সিরিয়াল নম্বর না মিলিয়েই। পরে পারেখরা চিঠি দিয়ে আদালতের কাছে সাড়ে তিনশো টাকার সেই ঘড়ি ফেরত চান।
১১) পুলিশ অকুস্থলে পৌঁছনোর ঘণ্টা দুয়েকের মধ্য়ে ধনঞ্জয়কে পলাতক এবং সম্ভাব্য অপরাধী বলে ঘোষণা করে দেওয়ার পিছনে পারেখ পরিবারের হাত ছিল।
১২) ধনঞ্জয় কেন খুন করে থাকতে পারে, তার একটা কারণ দাঁড় করানোর জন্য জাল নথিপত্র তৈরিতে হেতালের বাবা অংশ নিয়েছিলেন। হেতলকে ধনঞ্জয়ের উত্যক্ত করার গোটা "কাহিনী" পুলিশকে জানিয়েছিল তার বাড়ির লোক। আার কেউ এব্য়াপারে কিছুই জানত না।
১৩) পারেখ পরিবারের তরফে হেতলের মায়ের বাড়ি থেকে বেরনো আর হেতলের বাবার বাড়ি ফেরার সময়ের বিকৃত তথ্য পুলিশকে দেওয়া হয়। আদালতেও সেই বিকৃতি বজায় রাখা হয়।

১৪) হেতলের পেটে হজম না-হওয়া যে খাবার পাওয়া গিয়েছে, তাতে খাওয়ার পর (বা খাওয়া চলতে চলতে) মায়ের সঙ্গে সংঘাতে খুন হওয়ায় তত্ত্বের সমর্থন মেলে।
১৫) হেতল খুন হওয়ার ছয় মাসের মধ্য়ে তার বাবা ৬২ বছর বয়সে, মধ্য় কলকাতার নতুন কেনা ৪ কামরার ফ্ল্যাটবাড়ি আর প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা ছেড়ে, তাড়াহুড়ো করে সপরিবারে পাকাপাকি ভাবে মুম্বই চলে যান। তখনও হেতল মামলার সাক্ষ্য নেওয়া শুরু হয়নি। সেই সময় হেতলের দাদার পরীক্ষা সামনে ছিল। এমন কী গোপনীয়তা ছিল যে, মুম্বই যাওয়ার পরও পারেখরা আদালতে মিথ্যা বলেছেন যে, তাঁরা পদ্মপুকুরের ফ্ল্যাটেই থাকেন।

১৬) পারেখ পরিবার সংবাদ মাধ্য়ম থেকে বরাবর দূরে থেকেছে। কলকাতা ও মুম্বইয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছে। ধনঞ্জয়ের দোষ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে উদ্যোগ নেওয়ার বেলায় এই উদাসীনতা দেখা যায়নি।

সত্যি কি মিথ্যা ফাঁসির কাঠে ঝুলেছিল ধনঞ্জয়, চাঞ্চল্যকর তথ্য বদলে দিতে পারে ধারনা

পরিবারের কে কাজটা করল:( সূত্র- 'আদালত মিডিয়া সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি')

১) হেতলের বাবার জেরার সময় ধনঞ্জয়ের উকিল এক অদ্ভুত প্রশ্ন করেছিলেন। প্রশ্নটা ছিল, মৃত্যুর কয়েক মাস আগে হেতল রাধেশ্যাম নামে এক পরিচারকের পিঠে ওঠার চেষ্টা করেছিল কিনা, আর সেই নিয়ে রাধেশ্যাম ছাঁটাই হয়েছিল কিনা। হেতালের বাবা এই ঘটনা অস্বীকার করেন।

২) পড়শিরা জানিয়েছিলেন, খুনের আগের দিন মা-মেয়ে উঁচু গলায় কথা কাটাকাটির আওয়াজ পেয়েছিলেন। যৌন মিলনের ঘটনা হেতলের বিদ্রোহের ইচ্ছা থেকেও ঘটে থাকতে পারে। বাইরে থেকেই যৌন সংসর্গ করে হেতল বাড়ি ফিরেছিলেন সম্ভবত অনেকটা দেরিতে। হেতলের মা বাড়িতে একা অপেক্ষা করছিলেন। পরিস্থিতি বিস্ফোরণের জন্য প্রস্তুত ছিল।

৩) হেতল পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল স্কুলের ড্রেস পরে। মৃত্য়ুর সময় তার পরনে ছিল কালচে রঙের হাফ-হাতা ব্য়াগি টি-শার্ট আর গোলাপী মিডি স্কার্ট। অর্থাৎ বাড়ি ফিরে সে জামা পাল্টেছিল। সিজার লিস্ট থেকে জানা যায়, হেতলের নিম্নাংশের অন্তর্বাসে রক্তের দাগ ছাড়াও অন্য দাগ খালি চোখেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায় নিম্নাংশের অন্তর্বাসে বীর্যও পাওয়া গিয়েছে। হেতলের ছেড়ে রাখা এই অন্তর্বাস তার মায়ের চোখে পড়ে থাকতে পারে এবং অন্তর্বাসের চিহ্ন আসলে কীসের তা অনুমান করে হেতলের মা-এর মাথায় রক্ত চড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়।

সত্যি কি মিথ্যা ফাঁসির কাঠে ঝুলেছিল ধনঞ্জয়, চাঞ্চল্যকর তথ্য বদলে দিতে পারে ধারনা

ভুল পথে পুলিশি তদন্ত ? ( সূত্র- 'আদালত মিডিয়া সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি')

হেতল পারেখের খুনের ব্যাপারে ভবানীপুর থানায় প্রথম খবর পেয়েছিল হেতলের বাবার কাছ থেকে। খবর পেয়ে যে জেনারেল ডায়েরি নথিভুক্ত করা হয়। এতে সময় লেখা হয়েছে রাত ৯.১৫। তাতে ধনঞ্জয়ের নাম উল্লেখ ছিল না। এই জেনারেল ডায়েরিকে এফআইআর বলে ধরা হয়নি। পরে পুলিশের খাতায় হেতলের মায়ের জবানবন্দি বলে চিহ্নিত নথিকে এফআইআর বলে গণ্য করা হয়।

সত্যি কি মিথ্যা ফাঁসির কাঠে ঝুলেছিল ধনঞ্জয়, চাঞ্চল্যকর তথ্য বদলে দিতে পারে ধারনা

মিথ্যা তথ্যের খতিয়ান ( সূত্র- 'আদালত মিডিয়া সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি')

১) হেতল পারেখ খুন হয়েছিল ১৪ বছর বয়সে ( আসল তথ্য: খুনের সময় হেতালের বয়স ছিল ১৮ বছর)
২) হেতলকে খুনের পর ধর্ষণ করা হয়েছিল (আসল তথ্য: ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী হেতলের যৌন-সঙ্গম হয়েছিল মৃত্য়ুর আগে। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা তা জানার জন্য অন্য কোনও তথ্য মিলিয়ে দেখা হয়নি)
৩) হেতল পারেখকে খুন করা হয়েছিল গলায় রুমালের ফাঁস দিয়ে (আসল তথ্য:পুলিশ কুকুর কোনও রহস্য ভেদ করতে পারেনি। এফআইআর-এও এই রুমাল গড়হাজির।

সত্যি কি মিথ্যা ফাঁসির কাঠে ঝুলেছিল ধনঞ্জয়, চাঞ্চল্যকর তথ্য বদলে দিতে পারে ধারনা

জীবনের শেষক্ষণ পর্যন্ত ধনঞ্জয় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু, মানুষ তাঁর কথা বিশ্বাস করতে চায়নি। ফাঁসির দিন গ্রামের বাড়ির অন্ধকার ঘর থেকে বাইরে বের হননি ধনঞ্জয়ের বৃদ্ধ বাবা। ষাট পেরনো সেই ব্রাহ্মণ পুরোহিত ধনঞ্জয়ের ফাঁসির পর বাড়ির মন্দিরে কালীর থানে প্রার্থনা করেছিলেন যেন মৃত্যুর পর ভাল থাকে তাঁর ছেলে। তবে, তিনি বলেছিলেন একদিন এই বিশ্ব চরাচরেই প্রমাণিত হবে তাঁর ছেলে কতটা নির্দোষ ছিল। ধনঞ্জয়ের বৃদ্ধা বাবা আজ আর বেঁচে নেই। তাঁর স্ত্রী-র বর্তমান ঠিকানা ক'জন জানেন তা কেউ ঠিক করে বলতে পারেন না। কিন্তু, সন্দেহ নেই হারিয়ে গিয়েও এখন কলকাতাবাসীর মনে ফিরে এসেছে ধনঞ্জয়।

English summary
peoples wants to know the real case of dhananjoy chatterjee's hang
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X