'ইন্দু সরকার' নিয়ে মধুর ভান্ডারকরের কাছ থেকে আরও আশা ছিল চলচ্চিত্রপ্রেমীদের
৭০ এর দশকে জরুরী অবস্থা জারি হওয়ার সময় দেশের অশান্ত রাজনৈতিক বাতাবরণে এক মহিলার একার লড়াইয়ের কাহিনিই এই ছবির 'নিউক্লিয়াস'। ছবি মুক্তির আগে থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল 'ইন্দু সরকার'।
অভিনয় : কীর্তি কুলহারি, নীল নীতিন মুকেশ, অনুপম খের,টোটা রায়চৌধুরি, সুপ্রিয়া বিনোদ
পরিচালক : মধুর ভান্ডারকর
মূলত মধুর ভান্ডারকরের ছবি এক কথায় 'মহিলা কেন্দ্রিক' বলেই পরিচিত। ভিন্ন ভিন্ন ক্যানভাসে মধুর এক এক সময়ে এক এক নারীর যন্ত্রণাকে তুলে ধরেছেন। সেই যন্ত্রণা আঁকার ধরণে আদ্যোপান্ত ছাপ থেকে যায় তাঁর পরিচালনা দক্ষতার। 'ইন্দু সরকার'-র গল্পও আবর্তিত হয়েছে এক মহিলাকে কেন্দ্র করে। তবে সেই কাহিনির প্রেক্ষাপট দেশের এক অগ্নিগর্ভ সময়।
৭০ এর দশকে জরুরী অবস্থা জারি হওয়ার সময় দেশের অশান্ত রাজনৈতিক বাতাবরণে এক মহিলার একার লড়াইয়ের কাহিনিই এই ছবির 'নিউক্লিয়াস'। ছবি মুক্তির আগে থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল 'ইন্দু সরকার'। কংগ্রেসের তরফে এই ছবি নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। বিতর্কে নাম জড়ায় প্রয়াত কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় গান্ধির গোপন সন্তান বলে দাবি করা জনৈক প্রিয়া সিং পলের। তিনি আইনি লড়াইয়ের পথেও হাঁটেন। শেষমেশ আইনি লড়াই গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। আর মুক্তির ছাড়পত্র পায় 'ইন্দু সরকার'।
প্রেক্ষাপট
১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল। ভারতে তখন ঘোষণা হয় জরুরী অবস্থা। ইন্দিরা গান্ধি সরকারের সময়কালের এক অগ্নিগর্ভ পর্ব এই সময়। আর ঐতিহাসিক এই প্রেক্ষাপটকে ব্যবহার করেই ছবি তৈরি করেছেন মধুর। ছবিতে তিনি যতই এক মহিলার লড়াইকে তুলে ধরতে চেয়েছেন,ততই এসে পড়েছে বিতর্কিত এই প্রেক্ষাপটের নানা দিক।
কাহিনি
অনাথ
ইন্দিু
(কীর্তি
কুলহারি)
একলা
জীবনে
নিজের
মূল্যবোধ
মেনে
চলেন।
জরুরী
অবস্থার
সময়ে
এক
বিশেষ
কারণে
তাঁর
দমবন্ধ
লাগতে
শুরু
করে
আশপাশের
পরিবেশের
অবস্থা
দেখে।
এরকমই
এক
পরিস্থিতিতে
ইন্দু
খুঁজে
পান
নবীন
সরকার(টোটা
রায়চৌধুরী)
নামে
এক
ব্যাক্তির
বন্ধুত্ব।
দুজনের
বন্ধুত্ব
থেকে
ইন্দু
ভালোবাসারা
টান
আবিষ্কার
করেন।
বিয়ে
হয়
দুজনের।
কিন্তু
ইন্দুর
বিয়ের
পর
থেকেই
কাহিনি
মোড়
নেয়
অন্যদিকে।
রাজনৈতিক
এক
চক্রবূহ্য
ক্রমাগত
আষ্টে
পিষ্টে
জড়িয়ে
নিতে
থাকে
ইন্দুকে।
কাহিনির
এই
দিক
পরিবর্তনের
পর
ইন্দুর
লড়াই
দেখতে
হলে
যেতেই
হবে
প্রেক্ষাগৃহে।
অভিনয়
এই ছবিতে কীর্তি কুলহারি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করলেও , বাঙালি দর্শকের কাছি ছবির বড় পাওনা টলিউড অভিনেতা টোটা রায় চৌধুরী। নিজের চিরাচরিত সাবলীল অভিনয় মন জয় করেছেন তিনি। অন্যদিকে কীর্তি কুলহারি এই ছবির জন্য যে বেশ হোমওয়ার্ক করে শ্যুটিং ফ্লোরে আসতেন , তা তিনি নিজেই মেনে নিয়েছেন। ফলে কীর্তির অভিনয় থেকে পরিণত এক অভিনেত্রীকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। সঞ্জয় গান্ধির চরিত্র থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবিতে নীল নীতিন মুকেশ অভিনীত চরিত্রে 'লুক' এর ওপর যতটা যত্ন করা হয়েছে,ততটা তাঁর অভিনয় যত্ন পায়নি।
পরিচালনা
ছবি যখন মধুর ভান্ডারকরের তখন বক্স অফিস প্রথম দিনেই যে ভরিয়ে দেবে তা একেবারেই আশা করা যায়না। তবে 'চামেলী', 'চাঁদনী বার','পেজ থ্রি' এর মতো ছবি যাঁর মস্তিস্ক প্রসূত, তাঁর কাছ থেকে অনেক আশা দর্শকদের। সেই জায়গা থেকে কোথাও এই ছবিতে পিছিয়ে পড়েছেন মধুর।
সবশেষে
যে ছবি মুক্তির আগে থেকেই এতটা লাইমলাইটে, সে ছবি যেমনই হোক দর্শককে প্রেক্ষাগৃহে কিছুটা হলেও আকর্ষণ করে। তবে সবমিলিয়ে বলা যায়, ছবিতে গল্প, অভিনয়, পরিচালনা সমস্ত দিকেরই 'সেরা' পাওনা থাকলেও, সেই সবদিকের সঠিক মিশেল হয়নি।