৬০-এ পৌঁছেও তিনি আজও মোহময়ী, ফিরে দেখা ডিম্পল কাপাডিয়ার কিছু মুহূর্ত
এখনও ডিম্পল কাপাডিয়া রূপের ছটায় ম্লান করে দিতে পারেন এখনকার সেরা অভিনেত্রীদের। সিনিয়র সিটিজেন হয়েও তিনি এখনও মোহময়ী।
ভারতের প্রথম বড় সুপারস্টারের স্ত্রী, সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী। তা ছাড়াও তাঁর আর একটি পরিচয় ছিল। নিজের যৌবনের সময় তিনি হাজারো যুবকের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন নিজের রূপের গুনে। সেই তালিকায় শুধু আম আদমি নয়, ছিলেন টিনসেল টাউনের অনেক নামী ব্যক্তিত্বই।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে বহুচর্চিত ববি সিনেমা দিয়ে বলিউডে পা রাখা ডিম্পল কাপাডিয়া সেই বছরই বিয়ে করেন সুপারস্টার রাজেশ খান্নাকে। ১৯৮৪ সালে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় দুজনের। তবে নিজেকে রাজেশের থেকে আলাদা ভাবতে পারেননি কখনও। আর তাই আলাদা করে সংসারও পাততে হয়নি। রাজেশ খান্নার শেষবয়সে ফের একবার ডিম্পল একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। বলিউডে একসময়ে সেক্স সিম্বল হিসাবে পরিচিত ডিম্পল পরে নিজের অভিনয়ের গুনে একাধিকবার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন। এবছর সিনিয়র সিটিজেনের তকমা জুটে গেলেও এখনও তিনি রূপের ছটায় ম্লান করে দিতে পারেন এখনকার সেরা অভিনেত্রীদের।
অভিনয়ের শুরু
১৯৭৩ সালে রাজ কাপুরের সিনেমা 'ববি' দিয়ে বলিউডে অভিনয় শুরু করেন ডিম্পল কাপাডিয়া। তখন বয়স মাত্র ১৬ বছর। সেই বছরই রাজেশ খান্নার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এবং তিনি অভিনয় থেকে সরে আসেন। ১৯৮৪ সালে রাজেশের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার ১৯৮৫ সালে বড়পর্দায় ফেরেন সাগর সিনেমা নিয়ে। এবং ফের একবার সুপারহিট হয় সিনেমাটি। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন তিনি।
অভিনেত্রী হিসাবে নিজেকে ভাঙা-গড়া
সত্তরের দশকে যখন ববি সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় আসেন তারপর থেকে তিনি সারা দেশে 'সেক্স সিম্বল' হয়ে গিয়েছিলেন। তবে সেই তকমা সরিয়ে নিজেকে অভিনয়ের গুনে প্রতিষ্ঠিত করেন। সমান্তরাল সিনেমায় একেরপর এক পারফরম্যান্স দিয়ে গিয়েছেন। কাশ, দৃষ্টি, লেকিন, রুদালি-র মতো সিনেমা ফের একবার তাঁকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেয়।
নব্বইয়ের দশকে কেরিয়ার
নব্বইয়ের দশকে গরদিশ, ক্রান্তিবীরের মতো সিনেমায় জমিয়ে অভিনয় করেছেন ডিম্পল। এছাড়া ২০০১ সালে আমির খানের সিনেমা দিল চাহতা হ্যায়-তেও চ্যালেঞ্জিং রোলে অভিনয় করতে দেখা যায়। তারপরেও ২০০৪-১৪ সাল পর্যন্ত বেশ কিছু সিনেমার অভিনয় করেছেন ডিম্পল।
নতুন শতকে অভিনয়
ডিম্পল প্রতিবারই পর্দায় ফিরেছেন নতুন অভিনেত্রী হিসাবে। প্রতিবারই নিজেকে অন্যভাবে দর্শকের সামনে তুলে ধরেছেন। ফারহান আখটারের পরিচালক হিসাবে প্রথম সিনেমা দিল চাহতা হ্যায়-তে মধ্যবয়সী এক মহিলার চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। সিনেমায় ছিলে আমির খান, সঈফ আলি খান ও অক্ষয় খান্নার মতো অভিনেতা। সিনেমাটি অসাধারণ সাফল্য পায়।
রাজেশ খান্নার সঙ্গে বিয়ে
ববি সিনেমা মুক্তি পাওয়ার ছয় মাস আগেই রাজেশ খান্নার সঙ্গে ডিম্পলের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। বিয়ের পর দীর্ঘ ১২ বছর অভিনয় করেননি ডিম্পল। রাজেশ খান্নাই অভিনয় করতে দেননি। ১৯৮২ সালে বিয়ের নয় বছর পর মেয়েদের নিয়ে শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে ওঠেন তিনি। এবং ২ বছরের মধ্যে অভিনয়ে ফেরেন।
তিক্ত অভিজ্ঞতা
১৯৮৫ সালে সিনেমায় ফেরার পর এক সাক্ষাৎকারে রাজেশ খান্নার সঙ্গে বিয়েকে মস্ত ভুল বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি। বলেন, রাজেশের সঙ্গে বিয়ের দিন থেকে পরিবারের সমস্ত সুখ বিদায় নিয়েছিল। তবে ২০১০ সালে ফের দুজনের মধ্যে মিটমাট হয়ে যায়। রাজেশের শেষসময়ে ডিম্পল তার কাছেই ছিলেন।
শেষ দশ বছরে ডিম্পলের অভিনয়
গত দশ বছরে ডিম্পল সেভাবে চ্যালেঞ্জিং রোলে অভিনয় করেননি। এর মধ্যে লাক বাই চান্স, দাবাং, পাতিয়ালা হাউস, ককটেল, ওয়েলকাম ব্যাক এর মতো সিনেমা রয়েছে। এর মধ্যে শুরুমাত্র লাক বাই চান্সে অভিনয়ের জন্য সেরা সহযোগী অভিনেত্রী হিসাবে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হন।
অভিনেত্রী হিসাবে সম্মাননা
রুদালি সিনেমার জন্য ১৯৯৩ সালে জাতীয় পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া ১৯৭৩ সালে ববি সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসাবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান। তারপরও মোট তিনবার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন তিনি।