Just In
Don't Miss
(ছবি) স্টোভ থেকে ওয়াশিং মেশিন, ভিনিগারেই সব সাফ
সুপারমার্কেটে গিয়ে গিয়ে বাড়ি পরিষ্কারের জন্য জিনিস কিনতে গিয়ে ভ্যাবাচাকা খেয়ে যেতে হয়। রান্নাঘরের স্ল্যাব পরিস্কারের জন্য একটি দ্রব্য তো স্টোভ পরিস্কারের জন্য আর একটি। কাঁচের টেবিল হলে একটি দ্রব্য আবার কাঠের হলে আর একটি। এমনই আরও কত কী। আর কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে আমরা এইধরণের বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনেও ফেলি।
কিন্তু আদতে লাভ হয় না কিছু। কারণ তাড়াহুড়োর মাথায়, কোনটা দিয়ে কোনটা সাফ করতে হবে ভাবতে গিয়েই মাথা আরও গুলিয়ে যায়। ফলে জিনিসগুলি কিনে আনার পর থেকে ২-১ বার খুব উৎসাহী হয়ে ব্যবহার করলেও তার পর থেকে সেই একইভাবে সাজানো পড়ে থাকে।
শুধু শুধু কেন এভাবে টাকার শ্রাদ্ধ করা। তার থেকে ভাল হয় না বাড়ির মধ্যেই যদি আমরা এমন কোনও একটা জিনিস পেয়ে যাই যা একসঙ্গে অনেকধরণের জিনিস সাফ করবে।
ভিনিগার হচ্ছে এমনই একটি দ্রব্য। যার সঙ্গে আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারের কিছু জিনিসের পারমুটেশন-কম্বিনেশন করলেই সমস্যার সমাধান। তাই সহজেই বাড়ি সাফ করতে হাতে ভিনিগার নিয়ে তৈরি হয়ে যান।
ভিনিগারের সাহায্য়ে কী কী পরিষ্কার করতে পারবেন আসুন দেখে নেওয়া যাক।
মেঝে
ভিনিগার হল মেঝে পরিষ্কারের জন্য সবচেয়ে ভাল উপায়। দুই তৃতীয়াংশ গরম জলে এক তৃতীয়াংশ ভিনিগার মেশান। এবার এই জলটি দিয়ে মেঝে মুছে নিন। এতে মেঝেতে চমক আসবে। মেঝেতে না দেখতে পাওয়া জীবাণুরও অবসান হবে।
নালি
অনেকসময়ই দেখা যায় বেসিনের নালি আটকে যায়। ফলে জল বেরতে না পেরে জমতে থাকে। গন্ধ ছাড়তে থাকে, মাছি উড়তে থাকে। কিন্তু ভিনিগার আর বেকিং সোডা দিয়েই এই সমস্যা দুর হবে।
প্রথমে এক কাপ বেকিং সোডা বেসিনের নালির মুখে ফেলে দিন। এর উপর দিয়ে ১ কাপ ভিনিগার ঢেলে দিন। এবার আধ ঘন্টা অপেক্ষা করুন সোডা ও ভিনিগার দুয়ে মিলে প্রতিক্রিয়া হবে। এবার এক কাপ গরম জল ঢেলে দিন।
যদি তাতেও নালির মুখ না খোলে তাহলে এই একই পদ্ধতি আরও একবার অনুসরণ করুন।
কিচেন স্ল্যাব
সমপরিমাণ ভিনিগার ও জল মিশিয়ে কিচেন স্ল্যাবে স্প্রে করুন। এবার একটি নরম কাপড় বা স্পঞ্জ দিয়ে মুছে নিন। স্ল্যাবের উপরের তেলচিটে ব্যাপারটা দূর করবে ভিনিগার। একইসঙ্গে দুর্গন্ধ হওয়াও আটকাবে।
আসবাব
এক কাপ জলে ৩ টেবিল চামচ ভিনিগার মেশান। এতে একটি নরম কাপড় ডুবিয়ে ভাল করে নিংড়ে নিয়ে তা দিয়ে মুছে দিন। আপনার আসবাব ঝকঝক করবে।
ওয়াশিং মেশিন
ওয়াশিং মেশিন আপনার জামাকাপড় ধোয় ঠিকই কিন্তু তাকেও মাঝে মধ্য পরিষ্কার করা প্রয়োজন। জামাকাপড় না ঢুকিয়ে সাবানের জায়গায় এক কাপ ভিনিগার দিয়ে ওয়াশিং মেশিন চালিয়ে নিন। এর ফলে মেশিনের ভিতরের পাইপলাইন পরিষ্কার হয়ে যাবে। এবং মেশিনের যে অংশে জামাকাপড় কাচা হয় তাও ময়লামুক্ত হবে।
স্টোভ
অনেক সময় ভাত করতে গিয়ে বা দুধ ফোটানোর সময় তা উতলে পড়ে স্টোভের চারিপাশে জমে যায়। অনেকসময় খাবার রান্নারক সময় নানা রকমের জিনিস পড়ে জ্বলে গিয়ে কালো দাগ হয়ে যায়। এখানেও মুশকিলআসান সেই ভিনিগারই।
সমপরিমাণ জল ও ভিনিগার মেশান। এবার যেখানে যেখানে ওই কালো দাগ রয়েছে সেখানে এই ভিনিগার জল দিয়ে দিন। আধ ঘন্টা বাদে শুকনো কাপড় দিয়ে ঘষলেও দেখবেন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে কড়া দাগ। এর পরে সাবান দিয়ে একবার ভাল করে মুছে নেবেন।বাসন
অনেক সময় রান্না করার সময় বাসনের তলা ধরে যায়। বা তেল চিটচিটে হয়ে যায়। বারবার সাবান ব্যবহার করেও কোনও সুরাহা হয় না। এক্ষেত্রে জল ও ভিনিগার মিশিয়ে ওই বাসন তাতে ভিজিয়ে রাখুন। আধ ঘন্টা পরে বেকিং সোডাকে গুঁড়ো সাবানের মতো ব্যবহার করে মেজে নিন। দেখবেন কোনও দাগ থাকবে না।
মাইক্রোওয়েভ
বেকিং, গ্রিলিং করতে করতে মাইক্রোওয়েভের ভিতরটা তেলচিটে হয়ে যায়। যা পরিষ্কার করা খুব ঝামেলার বিষয় বলে মনে হয়। কিন্তু আদতে না। একবাটি জলে ৪-৫ টেবিল চামচ ভিনিগার মেশান। এবার একটি মাইক্রোপ্রুফ বাটিতে করে মাইক্রোওভেনের মধ্যে ঢুকিয়ে দিন। এবার ৪-৫ মিনিট মাইক্রো হাইতে মাইক্রোওয়েভ চালিয়ে গরম হতে দিন জল।
জল গরম হয়ে যে ভিনিগারের বাষ্প বেরবে তাতেই তেলচিটে বিষয়টা আলগা হয়ে যায়। এরপর বাটিটি বের করে একটি শক্ত কাপড় দিয়ে হাল্কা হাতে ভিতরটা একবার মুছে নিন। তবে সাবধান, কারণ একে তো মাইক্রোর ভিতরটা গরম থাকবে তার উপর ভিতরে অনেক সুক্ষ্ম সুক্ষ্ণ তার থাকে বেশি ঘষতে গেলে তাপ ছিঁড়ে যেতে পারে।রেফ্রিজারেটর
জল ও ভিনিগার মিশিয়ে প্রথমে এই জল দিয়ে স্প্রে করে নিন। এরপর একটি নরম কাপড় দিয়ে ভাল করে মুছে নিন। দেখবেন আপনার ফ্রিজ চকচক করবে। একইসঙ্গে দুর্গন্ধও দুর হবে।
তোয়ালে
তোয়ালে ব্যবহার করতে করতে অনেকসময় রুক্ষ ও শক্ত হয়ে যায়। এই ধরণের তোয়ালে ধোয়ার জন্য বেকিং সোডা ও ভিনিগার ব্যবহার করুন। সোডা তোয়ালে পরিষ্কার করবে এবং ভিনিগার তোয়ালেকে নরম করবে।